পোস্টগুলি

2017 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আজও বহ্নিমান

অগ্নিপরীক্ষা হয় আজও, হয় মৃত্যুর আলিঙ্গনে, সীতার পাতাল প্রবেশ। অহল্যা আজও অবাক,  নির্বাক, সতীত্বের ক্রূর সঙ্গা আজও বহ্নিমান। দ্রৌপদী আজও উলঙ্গ হয়, বস্ত্রহরণ!  সে তো রূপক মাত্র। দুঃশাসন! রূপকের সাজে যুধিষ্ঠিরের বিবেক। শব্দ শায়কে নগ্ন নারী অথবা মত্ত পুঙ্গব স্পর্শে। সখা আজ নিরুদ্দেশে, শুধু ঘুনপোকাদের বাস। অপরূপার চোখে কাপড়, জং ধরেছে নিক্তিতে।

পদ্য কথন

ছন্দ দিয়ে ছন্দ মেলাও আমের সাথে জাম, পদ্য লেখা নয়কো কঠিন কি আর এমন কাম। বললে হেসে হারাণ খুড়ো ভাবছ কি হে বৎস ! পদ্য লেখা আমার কাছে  দু-আঙুলে নস্য । পদ্য আমার বংশগত পদ্য আমার রক্তে, ছন্দ নাচে মাছের ঝোলে ছন্দ নাচে সুক্তে। হাবুল বলে হয়নাকি তা শুধু ছন্দ দিয়ে পদ্য ! যদি না থাকে তার মধ্যে একটু খানিক গদ্য। রঙের সাথে রঙ মিলিয়ে হয় কি আর আঁকা, খুড়ো বলে অল্প বয়সে খুব হয়েছ পাকা। পদ্য কাকে বলে সেটা শিখব তোর কাছে ! পদ্যের যত ছন্দ, আমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে আছে। শেষের সাথে শেষকে মেলাও, যা খুশি তাই কলম চালাও, ভাব বা মানে কোন কিছুর নেই কোন দরকার, মানুষ যত অবুঝ হবে বাড়বে কদর তার। এই যুগেতে খুঁজলে মানে বলবে সবাই বোকা, ভরবে না পেট, হবে শুধু খাবার গন্ধ শোঁকা। হাবুল বলে তাহলে আর মিছেই করা কষ্ট, এদিক ওদিক নকল করে লিখে দেওয়াই বেশ তো। তাতেও লাগে বুকের পাটা  এলেম লাগে ভাই, সাধ তবু হই অকালপক্ক ভাঙা কুলোর ছাই।

কোজাগরী

(ঋতুযান পত্রিকায় প্রকাশিত) আজ আঁধারে আলোর বন্যা, নিশি কষ্টের দরজায় আগল, ধুপের সুগন্ধে বাতাস ভারী, পুতগন্ধীময় রোজনামচার ছুটি আজ। দুখের দরজায় ফুলের সাজ, পিটুলি গোলা জলের আলপনার সারি, বুভুক্ষু চোখে হাজার বাতির আলো, চিড়ে-মুড়কি, মন্ডা-মিঠায়ের স্তুপ, দুস্থ পিপীলিকার অবাক চাউনি। মহাসিন্ধুর আশায় আজ বিন্দু বিন্দু সঞ্চয়ের সম্প্রদান, আগামীকাল শুরু খুদকুঁড়োর সন্ধান। সুখ-সকালের আশায় থাকা, কে জাগরী ! কে জেগে রয় ! ঘুমপরীদের ঘুম পাড়িয়ে নিশি জাগরণ আজ, রূপকথার জন্ম প্রতিক্ষায়।

তুমি না থাকলে

মা দূর্গার আরাধনায় উৎসবে মেতেছে গোটা বঙ্গ তথা সারা দেশ। এই আরাধনার মূল উদ্যক্তা ছিলেন স্বয়ং শ্রী রামচন্দ্র। সে কাহিনী আমরা রামায়ণে পড়েছি। কিন্তু একজন না থাকলে কোন মতেই আমরা এই মহিষমর্দিনী রূপের আরাধনায় মেতে উঠতে পারতাম না। ভাবছেন তিনি আবার কে ! গল্প উপন্যাসে যেমন নায়কের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে খলনায়কের অবতারনা করা হয় তেমনি অশুভ শক্তির উদয় না হলে শুভ শক্তির আবির্ভাব হয় না। ©Sudipta যদি মহিষাসুর না থাকত তাহলে মহিষমর্দিনী রূপ আমরা দেখতে পেতাম না আর আমাদেরও উৎসবে মেতে ওঠা হত না। শুধু কি মহিষাসুরের মধ্যেই অশুভ শক্তির বসবাস ! পূরাণ কিন্তু অন্য কথা বলে। অশুভ শক্তির বিনাশে অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে মহিষাসুর একজন কলাকুশলী মাত্র। আর শুভ শক্তির মধ্যেই যদি অশুভ শক্তির উদয় হয় তাহলে সেই অশুভ শক্তির বিনাশের জন্য একটু ছলনার আশ্রয় তো নিতেই হয় মানে এযুগের ভাষায় "গট আপ গেম"। না না কেউ ধর্মের দোহাই দিয়ে রে রে করে তেড়ে আসার আগে একটু কালিকা পূরানে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক। যে কোন পূরাণেই সৃষ্টির আদিতে মহামায়াকেই জগৎ নিয়ন্ত্রক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। কালিকাপূরাণেও এর অন্যথা হয়নি। অস

বন্ধু আয়

মাঞ্জা সুতো, কাঠের লাটাই, আকাশ জুড়ে রঙের মেলা, ঘুড়ির সাথে সময় কাটাই। দীঘির থেকে একটু দূরে, ঐ যে নদী, নৌকা চুরি, একটু ঘুড়ি মাঝ নদীতে নদীর চরে। হাতে হাত ছিপ, ইলশেগুঁড়ি ভিজে চুপচুপ খেলার সাথি, কে যাবি আয় আমার সাথে বুকের মাঝে চড়ুইভাতি।

খিদে

ঝুপ করে সন্ধ্যা নামে, বুভুক্ষুরা জেগে ওঠে জ্যোৎস্নায়। মনের খিদে শব্দ খোঁজে, পেটের খিদে খোঁজে ভাত, শরীর খোঁজে শ্বাপদ, ঘনায় রাত। স্বপ্ন মোহিনী সুরা পাত্র হাতে, শব্দেরা আসে, দেয় ধরা। বিষ মেখে শুয়ে থাকে মোহিনী। খালি পেটে কি সুরা সয় ! খালি পেটে যৌনতা জাগে না, খালি পেটে কাব্যেরাও আসে না, পূর্ণিমার চাঁদে পোড়া রুটি ঝাপসা, চাঁদের আলো বিভিষিকাময়, শুরু, পেটে মোচড় দেওয়া আর এক রাতের সংগ্রাম।

প্রেম আমার

# প্রেম আমার # সুদীপ্ত চক্র ফর্সা রঙ, পরিপুষ্ট গড়ন, দেখলেই মনটা কেমন আনচান করে ওঠে। সাইজ এই ধরুন আঙ্গুল বিহীন হাতের তালুর মতো। হালকা হাতে তাকে স্পর্শ করলে মনে এক স্বর্গীয় অনুভুতি লাভ হয়।  পূর্বরাগে যত চটাকাতে পারবেন, তার উত্তরকালীন শ্রী তত বৃদ্ধি পাবে। সাথে যদি কচি বেগুন ভাজা হয় তাহলে তো পুরো জমে ক্ষীর। ওহঃ ভাবতেই আমার জিভে জল চলে আসছে। মিহি সাদা ধবধবে ময়দায় একটু  বেশি করে ঘি নিদেন পক্ষে ডালডার ময়ান দিয়ে ধিরে ধিরে চটকাতে থাকুন মানে ওই থাসতে থাকা আর কি। এরপর ছোট ছোট লেচি করে নিটোল গোল আকারে বেলে ডুবো তেলে ভেজে তুলুন ফুলকো লুচি। তবে লুচি মাত্রেই যে বেগুন ভাজা সহযোগে সাবার করতে হবে তার কোন মানে নেই । তবে দিনের একএক সময়ে লুচির সাথির বদলে বেশ আমেজ আসে। এই যেমন ধরুন সকালের জলখাবারে বেগুন ভাজার সাথে যুগলবন্দী অতুলনীয়। সাথে কড়াপাকের খান দুয়েক সন্দেশ। আপনি ইচ্ছে করলে বেগুনের পরিবর্তে আলুচচ্চড়ীও দিতে পারেন, আমার কোন আপত্তি নেই। কোনদিন ধরুন হঠাৎ সন্ধ্যেবেলা মনটা লুচি লুচি করে উঠল তাহলে কিন্তু একটু ঝিরিঝিরি করে কাটা আলুভাজা দেবেন। আমার এক ভাগনে এইরকম আলুভাজাকে দাড়ি কাটা আলুভাজা ব

২৫শে আলাপ

যদি তারে নাই চিনি গো সে কি ...... সৈকত গুনগুন করতে করতে একটা কাগজে কিছু লিখছিল। হঠাৎ  অঙ্কিতা কাগজটা হাতে নিয়ে দলা পাকিয়ে ঘরের এক কোনে ছুঁড়ে ফেলে দিল। সৈকত বুঝল প্রবল ঝড়ের আগমন বার্তা। ঝড়ের প্রকোপ কমানোর জন্য সৈকত বলল - -  ছলছল চোখ , রক্তরাঙা মুখ, প্রিয়ে  কি বা হেতু তোমার এ রূপ। - ন্যাকামি হচ্ছে ! - না মানে - আজ তোমার জন্য সবার কাছে আমার মাথা হেঁট হয়েগেছে। - আমার জন্য ! আমি আবার কি করলাম !  আমি তো তোমাদের রবীন্দ্র জয়ন্তী উৎসবে যাই নি।  তাহলে ? - সেই জন্যেইতো দিপালী সবার সামনে ও ভাবে অপমান করল। - কি রকম কি রকম ! - তোমার মজা লাগছে ! তা তো লাগবেই।  আমাকে সবার সামনে ছোট হতে দেখলে তোমার শরীরের জ্বালা জুড়োয় তাই না ? - আহা ওই দেখ কি কথার কি মানে করে বসে। কি বলেছে সেটাতো বলবে। - আমাকে দেখে বলল, কি রে সৈকত আসে নি। আমি বললাম না। তা ও কি বলে জানো!  বলে সেকিরে এদিক ওদিক দুপাতা গল্প লিখেই নিজেকে রবি ঠাকুর ভাবছে নাকি ! ভাগ্যিস মধুরিমা এসে পরেছিল তাই রক্ষে না হলে আর কি কি যে শুনতে হত কে জানে।  এই সব তোমার জন্যে। - আসলে কি জানো গিন্নী এই বাংলায় জন্মেও রবি ঠাকুরের মতো কেউ হতে পা

বর্ষবরণ

কিছুদিন যাবৎ শরীরটা একটু গোলমাল করছে। রক্তচাপ চিনিচাপ দুটোই উর্দ্ধমুখী। ফল স্বরূপ খাওয়াদাওয়ার প্রতি বাড়ির সবার কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে অবস্থান করছি। বছরের শেষদিন একটু মিষ্টিমুখ করার প্রবল ইচ্ছা মনে জেগে উঠল। কথায় বলে যার শেষ ভাল তার সব ভালো। সেই শেষটুকু ভালো করার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পরলাম। ছোট থেকেই রসগোল্লার প্রতি আমার বিশেষ অনুরাগ। কিন্তু পরিচিত দোকানগুলিতে গেলেই বিপদ। কখন কার সাথে দেখা হয়ে যাবে আর সংবাদ পৌঁছে যাবে সোজা বাড়ির অন্দর মহলে। তারপর কি হবে তা আর খোলসা করে না বলাই ভালো। তাই খুঁজেপেতে একটা অনামি দোকানে হাজির হলাম। কাঠের বেঞ্চে বসে দুটো বড় সাইজের রসগোল্লা নিয়ে সবে এক কামড় দিয়েছি হঠাৎ পিঠে এক বিরাশিসিক্কার থাপ্পর। ভাবলাম হয়েগেল , আজ বাড়ি ফিরে কপালে দূঃখ আছে। ভয়ে ভয়ে পিছন ঘুরে তাকালাম। কিন্তু আধা অন্ধকারে ছায়ামূর্তিটিকে ঠিক ঠাহর করতে পারলাম না। একটু অবাক চোখে তাকিয়ে রইলাম। ছায়ামূর্তি বলে উঠল - - কি করে চিন্তে পারছিস না ? - না মানে ঠিক ঠাহর করতে পারছিনা। - তা পারবি কেন ? চুপিচুপি এসে সাঁটাতে বসেগেছিস, এখন আর কাউকে মনে থাকে নাকি। বলেই লম্বা  হাতে খপ করে

চেনা পুরী অচেনা ভ্রমণ

ছবি
সমুদ্রের প্রতি আমার একটা অমোঘ আকর্ষন আছে সেটা অস্বীকার করতে পারি না। আর বাঙালীর কাছে সস্তার সমুদ্র ভ্রমনের জায়গা হল পুরী। অনেকে এই পর্যন্ত পড়েই রে রে করে উঠবেন যে বাঙালী পুরী যায় তীর্থ করতে। সমুদ্র ভ্রমন কেন হবে। সেটা হয়তো অনেকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু আমার মতো কতিপয় মানুষ আছেন যাদের কাছে পুরী মানেই সমুদ্র। আমার কাছে সন্ধ্যেবেলা বৌ-মেয়েকে পাশে নিয়ে সমুদ্রের ধারে বসে থাকার আনন্দটাই আলাদা রকম। এর আগেও বহুবার পুরী গিয়েছি তাই এবারে পুরী যাওয়ার কথা উঠতেই বৌ বলল একই জায়গায় কতবার যাবে!  মেয়ে বলল যেতে পারি তবে সমুদ্র ছাড়া আর কোথাও যাব না। কিন্তু সারাদিন সমুদ্রের ধারে কি করব সেটাও একটা সমস্যা। পুরীর আশেপাশে যে দর্শনীয় স্থান গুলি আছে তা আগে বেশ কয়েক বার দেখা হয়েগেছে। তাই এবার ভাবলাম যে পুরীর আশেপাশে এমন কোন জায়গায় যাব যেখানে আগে কখনো যাই নি। তাই মেয়েকে বললাম চল এবার নতুন ভাবে পুরী দেখব। দূর্গাপুর থেকে হাওড়া স্টেশন হয়ে র ওনা দিলাম পুরীর পথে।পরদিন সকালবেলা পুরী স্টেশন পৌঁছে অটো ধরে চললাম স্বর্গদ্বারের দিকে। অটো যখন নিউ মেরিন ড্রাইভ রোডে উঠল তখন সমুদ্রের গর্জন আর হালক