পোস্টগুলি

2016 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

প্রতিবিম্ব

অফিস থেকে ফিরে চায়ের কাপ হাতে টিভিতে খবরের চ্যানেলগুলো ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে দেখা শুদ্ধশীলের অনেকদিনের অভ্যেস। শুদ্ধশীল বেশ সৌখিন মানুষ। মনোরমা য়্যাপার্টমেন্টের এই ফ্ল্যাটটা বছর খানেক হল কিনেছেন। নিজের মনের মত সাজিয়ে তুলেছেন এই ফ্ল্যাট। শুদ্ধশীলের সবচেয়ে প্রিয় জায়গা এই ডাইনিং ক্যাম ড্রয়িং রুম। সুতপা মানে ওনার স্ত্রীর সাথে এই ফ্ল্যাট কেনা নিয়ে একটু যে মতান্তর হয়নি তা নয়। শ্বশুড়ের অতবড় পৈত্রিক বাড়ি ছেড়ে এই তিন কামরার ফ্ল্যাট সুতপার ঠিক পচ্ছন্দ ছিল না। কিন্তু শুদ্ধশীল নাছড়বান্দা। তার যুক্তি অতবড় বিদেশী কম্পানীর সেলস ম্যানেজারের এইরকম সাবেকী আমলের বাড়ি মানায় না। তাছাড়া ব্যাঙ্ক যখন লোন দিতে রাজি হয়েছে তখন ফ্ল্যাটটা নিয়ে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। সুতপার এই ব্যাঙ্ক লোনের ব্যাপারেও আপত্তি ছিল।  শুদ্ধশীলের যুক্তি ছিল , এখন তার বয়স ৪৪ বছর , আর লোন শোধের সময় সীমা ১৫ বছর। অতএব রিটায়ারমেন্টের এক বছর আগেই ব্যাঙ্কের ধার শোধ হয়ে যাবে। ফ্ল্যাটটা শুদ্ধশীলের পছন্দ হলেও অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দাদের তাঁর ঠিক পছন্দ ছিল না। মানে অন্যদেরকে নিজের স্ট্যাটাসের সমতুল্য মনে করতেন না। সব থেকে অ

ভদ্রাবতী কথা

ছবি
সে অনেকদিন আগের কথা, তখন এই বঙ্গে অনেক রাজা রাজত্ব করতো। এমনই এক রাজা ছিলেন পুরুলিয়ার কাশিপুর অঞ্চলের পঞ্চকোট রাজপরিবারের মহারাজ নীলমণি সিং দেও। এই রাজার রাজ্যে এক ছোট্ট গ্রামে বাস করতো ছোট্ট এক মেয়ে। তার নাম ছিল ভদ্রাবতী। রূপে গুণে সে ছিল যেন সাক্ষাত দেবী লক্ষী। রাজা নীলমণি লোক মুখে সে খবর পেয়ে  একদিন হাজির হলেন সেই গ্রামে। ছোট্ট ভদ্রাবতীকে দেখে রাজা অভিভূত হয়ে গেলেন। এ যেন সত্যি সত্যি সাক্ষাত দেবী লক্ষী। রাজা মনে মনে ভদ্রাবতীকে নিজের মেয়ে বলে মেনে নিলেন। ভদ্রাবতীর পিতাকে ডেকে বললেন ভদ্রাবতীকে তিনি নিজের রাজপ্রাসাদে নিয়েগিয়ে রাখবেন। আজ থেকে ভদ্রাবতীর সমস্ত দায়িত্ব রাজার। কিন্তু পিতা তাঁর নিজের মেয়েকে কাছ ছাড়া করতে চাইলেন না। তার মেয়ে অন্ত প্রাণ, কি করে সে মেয়েকে ছেড়ে থাকবে  ! রাজা বললেন ঠিক আছে মেয়ে তোমার কাছেই থাক কিন্তু আজ থেকে তার ভালমন্দ সবকিছুর দায়িত্ব আমার। ছোট্ট ভদ্রাবতীর হেসে খেলে দিন যায়। ধীরে ধীরে তার দেহে ও মনে আসে যৌবনের ছোঁয়া। তাদের পাশের গ্রামের অঞ্জন নামে এক যুবকের সাথে গড়ে উঠল তার প্রেমের সম্পর্ক। দুজনে দুজনকে চোখে হারায়। ভদ্রাবতী গান গায় , অঞ্জ

অ-সম

মামণি তোমার আশ্রম চলে এসেছে। - ও চলে এসেছে ! পর্ণা রিক্সা থেকে নেমে দাঁড়ায়। ব্যাগ থেকে একটা ২০ টাকার নোট বাড় করে। - হরি কাকা এই নাও। - কিন্তু মামণি আমার কাছে তো পাঁচ টাকা খুচরো হবে না। ঠিক আছে পরে না হয় শোধবোধ হয়ে যাবে। - না হরি কাকা শোধবোধ করতে হবে না। তুমি পুরোটাই রেখে দাও। পর্ণা আশ্রমের গেট খুলে ভিতরে চলে যায়। বিঘা খানেক জায়গার উপর এই আশ্রম গড়ে উঠেছে। আশ্রম বলতে এটা কিছু অনাথ বাচ্ছাদের আশ্রয়স্থল। পর্ণা প্রথম যখন এখানে দায়িত্ব নিয়ে আসে তখন এখানে বিশেষ কিছু ছিল না। অনাথ বাচ্ছাদের থাকার জন্য দুটো ঘর, একটা স্কুলঘর, আর বাচ্ছাদের ঘরের পাশে ছোট্ট একটা যেটাতে পর্ণা থাকে। যিনি এই আশ্রমটি গড়ে তুলেছিলেন, নাম দিয়েছিলেন শিশু নিকেতন। বর্তমানে এটি একটি ট্রাস্টের মাধ্যমে চলে। সুপ্রভা মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। আশ্রমের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সুপ্রভা সরকারের হাত ধরেই। তিনি যতদিন বেঁচেছিলেন ততদিন আশ্রমের ওই ছোট্ট ঘরটাতেই থাকতেন যেটাতে এখন পর্ণা থাকে। সুপ্রভাদেবীর মৃতযুর পর ওনার ছেলে এই ট্রাস্ট তৈরী করে দিয়েছেন যাতে আশ্রমের কারও কোন আর্থিক অসুবিধা না হয়। পর্ণা প্রথম যেদিন এখানে আসে এই হ

অবান্তর প্রলাপ

অনেকদিন রান্নার আওয়াজ শোনা হয়নি , এবার প্রাণ ভরে শুনবো, এখনতো অখণ্ড অবসর। সকালের বিছানায় শুয়ে থাকে যে রোদ, আদর করিনি অনেকদিন, এবার করব সহবাস, এখনতো অখণ্ড অবসর। নিঃস্তব্ধ দুপুরে পাখার আওয়াজ শুনিনি অনেকদিন, এবার ওর সাথে সুর মেলাবো, এখনতো অখণ্ড অবসর। গোধূলির শেষে সন্ধ্যা তারা দেখা হয়নি বহুদিন, এবার গল্প শোনাব তাকে, এখনতো অখণ্ড অবসর। রাতপরীরা গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়াতো আমায়, এবার গল্প শোনাব তাদের, এখনতো অখণ্ড অবসর। রাতের শিশিরের শব্দ কানপেতে শুনিনি কোনদিন, এবার মনপেতে শুনবো, এখনতো অখণ্ড অবসর। রাতের আঁধারে লুকিয়ে নেব মনের সব ক্ষত গুলো, রাত জাগবো আঁধারের সাথে, এখনতো অখণ্ড অবসর। নিঝুম রাত্রিকে করেছি সাথি, ভোরের আলোয় লাগে ভয়, আবার একটা অলস দিন ! এখন আমার অকাল অবসর।।

নববর্ষের বৈঠক

আজ   একটু   তাড়াতাড়ি   ঘুমটা   ভেঙেগেল   সুতনুর ‌ ।   ঘড়িতে   দেখল ৫টা   বাজে ।   নাঃ   এই   গরমে   ঘুমের   দফারফা ,  আজ   আর   ঘুম   হবে   না ।   কাল   রাতে   শুতে   যাওয়ার   আগে   ভেবেছিল   সকালবেলা   উঠে   হোয়টস্   অ্যাপ   গ্রুপে   জব্বর   একটা   ম্যাসেজ   করতে   হবে ।   নববর্ষ   বলে   কথা ।     তাই   আজ   তাড়াতাড়ি   ঘুমটা   ভেঙে   যেতে   বাথরুমের   কাজ   সেরে   চা   আর   মোবাইলটা   নিয়ে   বারান্দায়   এসে   বসল ।   এখন ৬টা   বাজে ।   হোয়াটস্   অ্যাপ   গ্রুপটা   অন   করতেই   এক   ঝাঁক   ম্যাসেজ   এসে   ঢুকল ।   পুরানো   বন্ধুদের   গ্রুপ ।   কেউ   নবর্ষের   কার্ড   পোষ্ট   করেছে   কেউ   ছোট্ট   দু - এক   লাইনের   শুভেচ্ছাবার্তা ।   তারপর   যে   ম্যাসেজ   গুলো   দেখল   সেগুলো   দেখেই   একরাশ   বিরক্তি   সুতনুকে   গ্রাস   করল ।   কে   আজ কোথায়   নববর্ষ   সেলিব্রেট   করবে   কি   তার   মেনু   তার ফিরিস্তি ।   কেউ   কেউ আবার   সম্ভাব্য খরচের   হিসেবনিকেশ ও   দিয়ে   দিয়েছে ।   সুতনুর আর   কিছু শুভেচ্ছা   বার্তা   লেখার   ইচ্ছে   হলনা ।     শুধু   লিখল -  বাঃ