প্রতিবিম্ব


অফিস থেকে ফিরে চায়ের কাপ হাতে টিভিতে খবরের চ্যানেলগুলো ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে দেখা শুদ্ধশীলের অনেকদিনের অভ্যেস। শুদ্ধশীল বেশ সৌখিন মানুষ। মনোরমা য়্যাপার্টমেন্টের এই ফ্ল্যাটটা বছর খানেক হল কিনেছেন। নিজের মনের মত সাজিয়ে তুলেছেন এই ফ্ল্যাট। শুদ্ধশীলের সবচেয়ে প্রিয় জায়গা এই ডাইনিং ক্যাম ড্রয়িং রুম। সুতপা মানে ওনার স্ত্রীর সাথে এই ফ্ল্যাট কেনা নিয়ে একটু যে মতান্তর হয়নি তা নয়। শ্বশুড়ের অতবড় পৈত্রিক বাড়ি ছেড়ে এই তিন কামরার ফ্ল্যাট সুতপার ঠিক পচ্ছন্দ ছিল না। কিন্তু শুদ্ধশীল নাছড়বান্দা। তার যুক্তি অতবড় বিদেশী কম্পানীর সেলস ম্যানেজারের এইরকম সাবেকী আমলের বাড়ি মানায় না। তাছাড়া ব্যাঙ্ক যখন লোন দিতে রাজি হয়েছে তখন ফ্ল্যাটটা নিয়ে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। সুতপার এই ব্যাঙ্ক লোনের ব্যাপারেও আপত্তি ছিল।  শুদ্ধশীলের যুক্তি ছিল , এখন তার বয়স ৪৪ বছর , আর লোন শোধের সময় সীমা ১৫ বছর। অতএব রিটায়ারমেন্টের এক বছর আগেই ব্যাঙ্কের ধার শোধ হয়ে যাবে। ফ্ল্যাটটা শুদ্ধশীলের পছন্দ হলেও অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দাদের তাঁর ঠিক পছন্দ ছিল না। মানে অন্যদেরকে নিজের স্ট্যাটাসের সমতুল্য মনে করতেন না। সব থেকে অপছন্দ করতেন তার সামনের ফ্ল্যাটের হরিপদ বাবুকে, কোন এক কারখানার সুপারভাইজার।
হরিপদ সাধাসিধে মানুষ। স্ত্রী সুছন্দা আর মেয়ে সৌমিলিকে নিয়ে তার ছোট্ট সংসার। অনেক কষ্টে এই ফ্ল্যাটটা কিনেছেন। শরিকি ঝামেলায় পৈত্রিক ভিটেতে নিজের অংশ বিক্রি করে যে টাকা পেয়েছিলেন তাতেও এই ফ্ল্যাটের পুরো টাকা জোগার হয়নি। অবশেষে বাধ্য হয়ে সুছন্দার কিছু গয়না বিক্রি করে এই ফ্ল্যাটের টাকা শোধ করেন। যদিও অনেকে ব্যাঙ্ক লোনের পরামর্শ দিয়েছিল কিন্তু হরিপদ ও সুছন্দা দুজনেরই আপত্তি ছিল। এই গয়না বিক্রি নিয়ে সুছন্দার মনে কোন দুঃখ ছিল না কিন্তু হরিপদ ঠিক মন থেকে মেনে নিতে পারেননি। তবে স্ত্রী কন্যাকে নিয়ে নিজের এই ছোট্ট জগতে বেশ খুশিই ছিলেন তিনি।
সামনা সামনি ফ্ল্যাট হওয়াতে সুতপা আর সুছন্দার মধ্যে বেশ ভালোই আলাপ জমে উঠেছিল। স্ত্রীর এই মেলামেশার ব্যাপারে শুদ্ধশীলের আপত্তি ছিল।আকারে ইঙ্গিতে সুতপাকে অনেক বার বারণ করেছেন এই সব মধ্যবিত্ত লোকেদের সাথে বেশী মেলমেশা করতে।
শুদ্ধশীলের এক ছেলে ও এক মেয়ে, রিভু আর রিদ্ধি, শহরের নামীদামী স্কুলে পড়ে। তাদেরও সাবধান করে দিয়েছিলেন , হরিপদ বাবুর মেয়ের সাথে যেন মেলামেশা না করে।
কিন্তু শুদ্ধশীলের আড়ালে তার বারণ কেউ মানত না। তিনি যে এটা জানতেন না তা নয়, তাই নিজে যথা সম্ভব হরিপদকে এড়িয়ে চলতেন।
সেদিন অভ্যাস মত অফিস থেকে ফিরে টিভিতে খবর দেখছিলেন। সুতপা এসে চায়ের কাপ হাতে দিয়ে বলল-
- জানো, হরিপদ বাবুর কম্পানীটা হঠাৎ করে আজ বন্ধ হয়েগেল।
- কে হরিপদ ?
- আরে আমাদের সামনের ফ্ল্যাটের ভদ্রলোক।
- ভদ্রলোক !
- মানে ?
- না, খবরে সেটাই এতক্ষণ দেখছিলাম।
- ইস্, ওদের এখন কি যে হবে কে জানে।
- তোমার এত মাথা ব্যাথা কেন ?
- কি যে বলনা তুমি !
- ঠিকই বলছি। জানো সুতপা, এইসব লোকেদের এই রকমই হয়। কাজ না করে এই চাই ওই চাই সেই চাই। আরে বাবা কম্পানীকে কিছু না দিলে কম্পানী তোমাকে দেবে কেন !
- কিন্তু আমি শুনলাম কম্পানী অন্য জায়গায় নতুন ফ্যাক্টরী করেছে। তাই কায়দা করে এই পুরানো ফ্যাক্টরী বন্ধ করে দিল।
- আরে ধুর, ওসব গল্পে বিশ্বাস কর না।
- গল্প ?
- হ্যাঁ, গল্প, আরে বাবা কম্পানী যদি নতুন ফ্যাক্টরীই করে থাকে তাহলে তো কাজের লোকদের সেই ফ্যাক্টরীতেই তো নিয়ে যাবে। কিন্তু  কম্পানী এদেরকে ছাঁটাই করে দিয়েছে, কারণ অকাজের লোক দিয়ে কম্পানী চলে না।
এইতো আমাকেই দেখ, অফিসে গিয়ে নিশ্বাস ফেলার সময় পাই না। কম্পানীতে আমি প্রথমে সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসাবে যোগ দিয়েছিলাম আর এখন আমি সেলস ম্যানেজার। কম্পানী তো আর এমনি এমনি মুখ দেখে পয়সা দিচ্ছে না।
- কি জানি বাপু !
- বেশি জানতে যেও না। এইসব লোকদের কাজ কারবার জানলে পাগল হয়ে যাবে।
- কিন্তু
- কোন কিন্তু নয়। আর শোনো, ওদেরকে কোন পাত্তা দিও না। ছেলে-মেয়েদেরও বারণ কর যেন মেলামেশাটা এবার বন্ধ করে। এইসব মধ্যবিত্ত মানসিকতার লোকেরা এই অবস্থায় হাতপেতেই থাকে।
এরপর থেকে শুদ্ধশীল বাইরে বেড়বার আগে দরজাটা একটু ফাঁক করে আগে দেখেনেন যে সামনের ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ আছে কি না। যদি দেখেন দরজা বন্ধ অমনি সুরুৎ করে বেড়িয়ে এসে নিচে নামার পথ ধরেন। ওনার সব সময় মনে হয় এই বুঝি হরিপদ সাহায্য চেয়ে বসল।
সেদিনও সামনের ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ দেখে তাড়াতাড়ি নিচে নামছিলেন, দেখলেন হরিপদ উপরে আসছেন। শুদ্ধশীল মনেমনে ভাবলেন ওকে না দেখার ভাণ করে নিচে নেমে যাবেন কিন্তু হরিপদ ওকে অবাক করে একটু ম্লান হেসে পাশ কাটিয়ে উপরে উঠেগেলেন। হরিপদর এই আচরণে যেমন অবাক হলেন তেমন রেগেও গেলেন। মনে মনে বললেন 'হুঁঃ পেটে ভাত জোটেনা, তার আবার দেমাক দেখ'!

মাস খানেক এভাবেই কেটে যায়। হরিপদর সাথে সেভাবে আর মুখোমুখি দেখা হয়নি শুদ্ধশীলের।
দেখতে দেখতে পূজো প্রায় চলে এল। আর মাত্র কটা দিন, তারপর মায়ের আগমনে চারিদিক আলোর রোশনাইয়ে সেজে উঠবে। কয়েক মাস বসে থাকার পর অনেক চেষ্টা চরিত্র করে হরিপদ একটা শাড়ির গুদামে শাড়ির হিসাব নিকাশের কাজ জোগার করে নিয়েছে। মাইনে অবিশ্যি তেমন বেশি নয় তবে তিনজনের সংসার টেনেটুনে ঠিক চলে যাবে। মালিক ভদ্রলোক মন্দ নন,.পূজোর আগে কিছু টাকা এ্যাডভান্স দেবেন বলে কথা দিয়েছেন। কিছু না হোক মেয়েটাকে অন্তত একটা জামা কিনে দেওয়া যাবে।
এবারের পূজোর বাজারে শুদ্ধশীলের একটু বেশীই খরচা হয়েগেল। আসলে ব্র্যান্ডেড জামা কাপড়ের যা দাম হয়েছে যে খরচ না করেও উপায় নেই। এত খরচের জন্য সুতপা একটু রাগারাগি করছিল বটে কিন্তু সে সব ও তুড়িমেরে উড়িয়ে দিয়েছে। শুদ্ধশীলের সাফ কথা ইনকাম করি খরচা করার জন্য। ও সব মধ্যবিত্ত মানসিকতা নিয়ে এ যুগে বেঁচে থাকা যায় না।
লক্ষীপূজোর কয়েক সপ্তাহ পর একদিন অফিস থেকে ফিরতে বেশ রাত হয়েগেল শুদ্ধশীলের। মাঝে সুতপা বার কয়েক ফোনও করেছিল কিন্তু তিনি ফোন ধরেন নি।
পাড়ার মোড়ে বাস থেকে নেমে পা দুটো যেন আর চলতে চাইছে না। মনোরমা অ্যাপার্টমেন্টে নিজের ফ্ল্যাটটাকে যেন বহু উপরে মনে হচ্ছে। কোন রকমে ফ্ল্যাটের দরজার সামনে এসে দরজায় নক্ করলেন। দরজা খুলতেই দেখলেন সুতপা আর ছেলে-মেয়ে উদ্বিগ্ন মুখে দাঁড়িয়ে আছে। কোন রকমে নিজেকে টেনে নিয়ে গিয়ে সোফাতে ছেড়ে দিলেন।
সুতপা দৌড়ে এল।
- কি হয়েছে তোমার ?
শুদ্ধশীল কিছুক্ষণ শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল, বলল-
- পারলাম না সুতপা।
- কি হয়েছে কিছু বলবে তো ? কি পারলে না ?
- চাকরীটা বাঁচাতে পারলাম না।
সুতপা মাটিতে বসে পড়ল।
লক্ষীপূজোর পর যেদিন অফিসে গেল, তারপর থেকেই সুতপা লক্ষ করছিল শুদ্ধশীল বেশ আনমনা হয়ে থাকে। জিজ্ঞাসা করলে কিছু না বলে এড়িয়ে যায়। সুতপা বুঝতে পেরেছিল যে অফিসে কোন কিছু নিয়ে গোলমাল হচ্ছে কিন্তু সেটা যে এই পর্যায়ে আসবে ভাবতে পারেনি সে। শুদ্ধশীলের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে সে।
- বিশ্বাস করো সুতপা, এই কদিন অনেক চেষ্টা করেছি। নিজের কাজের দক্ষতা , অভিজ্ঞতা সবকিছু কম্পানীর কাছে তুলে ধরেছি। কিন্তু পারলাম না।
- কিন্তু কেন ? এত বড় একটা কম্পানী !
- কম্পানী নাকি লসে চলছে ! কিন্তু আমরা হিসাব করে দেখেছি এই বছর আজ পর্যন্ত কম্পানীর লাভের অঙ্ক অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশী।
- তাহলে ?
- মালিক পক্ষের সাফ কথা লোক কমাতে হবে। জানো শেষ পর্যন্ত আমি সেলস ম্যানের কাজেও ফিরতে চেয়েছি। কিন্তু ওদের বক্তব্য আমার মত অফিসারদের ওসব কাজে মানায় না।
মেয়ে এসে গলা জড়িয়ে ধরে বলল
- চিন্তা করো না, দেখো সব ঠিক হয়ে যাবে।

আজ প্রায় তিনমাস হতে চলল, শুদ্ধশীলের কোন আশার আলো চোখে পড়ছে না। যেখানেই কাজের সন্ধানে ছুটে যাচ্ছেন সেখানেই শুধু নেই নেই আর নেই। কি যে করবেন তার দিশা পাচ্ছেন না।  জমানো পুঁজি শেষের মুখে। সামনের মাস থেকে কি করে পেটের ভাত জোগাবেন আর কি করেই বা ব্যাঙ্কের লোন শোধ করবেন ভেবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সারাদিন যেন তার দমবন্ধ হয়ে আসে। রাত এলেই মনে হয় কাল আবার একটা কর্মহীন সকাল তার জন্য অপেক্ষা করে আছে। রাতে ঘুম আসে না।

সেদিন সন্ধ্যেবেলা জামা গায়ে দিয়ে সুতপাকে বলল
- শুনছ, আমি একটু বেড়চ্ছি।
- এই ভর সন্ধ্যেবেলা কোথায় যাচ্ছ আবার ?
- না এই একটু ঘুরে আসি। বাড়িতে বসে বসে আর ভালো লাগছে না।
- বেশী দেরী করো না কিন্তু।
- না না এইতো এক্ষুনি চলে আসব।
অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে এসে সামনের রাস্তা ধরে বাজারের দিকে পা বাড়ালেন।
দূর থেকে দেখলেন হরিপদ কাজ থেকে ফেরার পথে চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছে। একটু কাছাকাছি আসতে হরিপদ শুদ্ধশীলকে দেখে উঠে দাঁড়াল। শুদ্ধশীল না দেখার ভাণ করে জোরে পা চালালেন।
রাতে বাড়ি ফিরে তাড়াতাড়ি খেয়ে শুয়ে পড়লেন তিনি।
একটু পর বাড়ির সব আলো নিভে যেতেই ধীরে ধীরে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লেন শুদ্ধশীল। প্যান্টের পকেট থেকে ওষুধের মোরকটা নিয়ে এসে বিছানায় বসলেন।  ঘরের মায়াবি নীল আলোয় তার মুখটা অদ্ভুত শান্ত লাগছিল। বিছানায় বসে ভাবলেন পকেটে যে কটা টাকা ছিল তাতে এই পনেরোটা ট্যাবলেটই পাওয়া গেছে। আরও কয়েকটা হলে বেশ ভাল হত। কি আর করা যাবে।  এতেই মনে হয় কাজ হয়ে যাবে। ট্যাবলেটের পাতা থেকে একটা একটা করে ট্যাবলেট বার করে এক সাথে জল দিয়ে গিলে নূিলেন শুদ্ধশীল।
অনেকদিন পর এবার নিশ্চিন্তের ঘুম। চোখ দুটো জুড়িয়ে আসার আগে সুতপার মুখটা সামনে ভেসে উঠল। সুতপা বড্ড বেশী ভালোবাসে তাকে। কিন্তু তার সেই ভালবাসার দাম সে এ জীবনে দিতে পারল না। চোখের পাতা দুটো ভারি হয়ে আসে।

ঘুম যখন ভাঙল তখন অসহ্য যন্ত্রনায় মাথা ছিঁড়ে যাচ্ছে। চোখের দৃষ্টি একটু পরিষ্কার হতেই শুদ্ধশীল বুঝতে পারল সে কোন এক হাসপাতালের কেবিনে শুয়ে আছে। জানলা দিয়ে নরম আলো এসে তার মুখে পড়েছে। পাশ ফিরে শুতেই দেখল সুতপা আর ছেলেমেয়ে তার দিকে তাকিয়ে বসে আছে। তাদের চোখে শুকিয়ে যাওয়া জলের দাগ। সে তাদের কিছু বলতে যেতেই তারা কেবিন থেকে বেড়িয়ে চলে গেল। শুদ্ধশীল ভাবলেন সত্যিতো এই স্বার্থপর কাপুরুষ লোকটার ডাকে কেন তারা সারা দেবে। আবার যেন চোখটা একটু জুড়িয়ে আসছে।
খুট করে কেবিনের দরজায় একটু আওয়াজ হতেই শুদ্ধশীল চোখ মেলে তাকাল। দরজাটা একটু ফাঁক হতেই দেখাগেল একটা হাতে প্লাস্টিকের প্যাকেটে ঝোলান গুটিকয়েক আপেল। একটা মুখ উঁকি মারল। শুদ্ধশীল আজ বিরক্ত হতে গিয়েও হতে পারলেন না। হরিপদ আস্তে আস্তে এসে পাশে বসল। প্যাকেটটা টেবিলের উপর নামূয়ে রাখল।
কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, স্যার তিনদিন তো হয়েগেল আর কতদিন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকবেন। বিশ্বাস করুন সেদিন সন্ধ্যেবেলাতেই বলতাম কিন্তু আপনার মনে হয় তাড়া ছিল তাই আর পিছু ডাকলাম না। ভাবলাম পরের দিন সকালেই বলব। কিন্তু এই তিনদিন ধরে আপনিতো শুধুই ঘুমালেন।
শুদ্ধশীল অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। হরিপদর কথার মাথামুন্ডু কিছুই বুঝতে পারে না। হরিপদ কি ওর সাথে মশকরা করছেন !
হরিপদ বলে - ওহো, দেখেছেন স্যার আপনাকে তো আসল কথাটা বলাই হয় নি। আসলে কি হয়েছে জানেন আমি যে মালিকের শাড়ির গুদামে কাজ করি সেই মালিকের একটা এক্সপোর্ট ইমপোর্টের ব্যাবসা আছে। তো সেখানের ম্যানেজার বেশ কিছু টাকা মেরে পালিয়ে গেছে। তাই মালিক ম্যানেজারের কাজের জন্য  একজন বিশ্বাসী লোক খুঁজছেন। আমি বলছিলাম কি স্যার যতদিন না অন্য কোন ভাল কাজ পাচ্ছেন ততদিন না হয় আমার মালিককে একটু সাহায্য করতেন।
শুদ্ধশীল ধীরে ধীরে বিছানায় উঠে বসে বললেন - হরিপদ আমায় বাড়ি নিয়ে চলুন।

আজ একটু সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়েছেন শুদ্ধশীল। অনেকদিন পর সুতপাও সকাল থেকে ব্যাস্ত। প্রায় নটা বাজতে চলল। শুদ্ধশীল জামাপ্যান্ট পড়ে একদম তৈরী। হরিপদ ওর জন্য নিচে অপেক্ষা করবে বলেছে। বাড়ি থেকে বেড়বার আগে অভ্যাস বসত আয়নায় নিজেকে আরএকবার ভালো করে দেখে নিচ্ছিলেন শুদ্ধশীল। হঠাৎ দেখলেন আয়নায় নিজের প্রতিছবিটা ধীরে ধীরে ঠিক যেন হরিপদর মত হয়ে যাচ্ছে।

************** সমাপ্ত ****************

মন্তব্যসমূহ

  1. প্রতিটা চরিত্র - নিঁখুত। গল্পের গতি - মনোরম। ক্লাইম্যাক্স, আর অ্যান্টিক্লাইম্যাক্স - অসাধারণ! গল্পটা কিরকম, আর বলতে হবে?!

    উত্তরমুছুন
  2. চরিত্র চিত্রিণ একটা বেশ বড় ও অন্যতম প্রধান কাজ। সেটা এই গল্পে বেশ ভালো ভাবে পেলাম। পড়ে মনে হল অভিজ্ঞতা আর মুন্সীয়ানার মিশেল।

    উত্তরমুছুন
  3. আজ পর্যন্ত যত লেখা পড়েছি, নিশ্চিত ভাবে এটা সেরা লেখা। অন্য লেখার চ্যে এহাজার যজন এগিয়ে তো বটেই, এমনকি আমার পরা অন্যান্য অনেক ব্লগের চেয়েও এই লেখাকে অনেক এগিয়ে রাখবো। চরিত্রগুলো সামনে দেখতে পেলাম। ছুঁতে পারলাম। আর সবার চেয়ে বড় কথা, এ লেখা সমাজের আয়না। ধন্যবাদ এ লেখার জন্যে আর দেখিয়ে দেবার জন্যে, বাংলা গল্প কোন পর্যায়ে যেতে পারে। অসাধারন লেখা।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ছোট্টবেলার ছড়া

আগমনী

দুঃখ বিলাস