খেজুর রস

- কি ব্যাপার মহিম দা ? এ রকম ব্যাজার মুখে এই সময় পার্কে বসে ?
- এই সময় মানে ? পার্কে বসার জন্য পাঁজি দেখে আসতে হবে নাকি ?
- না তা ঠিক নয় মানে এই সন্ধ্যেবেলা তোমাকে বড় একটা দেখা যায় না তো তাই আর কি।
- ইচ্ছে হল তাই।
- কেসটা কি বল দেখি । বৌদির সাথে ক্যাঁচাল করেছ নাকি ?
- কেন ?
- মেজাজটা দেখছি কেমন যেন খিঁচড়ে আছে।
- না ভাই কিছু হয় নি আর যদি হয়েও থাকে তাহলে তোমার তাতে কি হে । যাও যাও নিজের কাজ করো গে।
- অ কেস জন্ডিস মনে হচ্ছে।
- ধুস শালা শান্তিতে বসারও উপায় নেই।
অগত্যা আমি মহিম সামন্ত বাড়ির পথে রওনা দিলাম। একটু শান্তিতে বসে চিন্তা ভাবনা করারও উপায় নেই। সব সময় কেউ না কেউ কিছু না কিছু ব্যাগড়া দিচ্ছে। আসলে কি হয়েছে জানেন বেশ কিছুদিন ধরে আমি একটু সমস্যায় পড়েছি।  মনটা বড়ই চঞ্চল হয়ে উঠেছে। তা প্রানের বন্ধু শুভকে বললাম এ কথা। ও বললে তা মনটাকে শান্ত করে ফেল। বললাম হচ্ছে না তো। শুভ আমার সেই ছেলেবেলার বন্ধু , বলল
- কেসটা কি বলতো ?
 আমার খুব ইয়ে পাচ্ছে ভাই কিন্তু হচ্ছে না।
- দু গ্লাস গরম জল মেরে সকাল সকাল বসে পর হবেই হবে একদম গ্যারেন্টি।
- আরে ধুর শালা এ ইয়ে সে ইয়ে নয় রে ভাই।
- তবে !
- ভাই আমার খুব লেখা পাচ্ছে কিন্তু লিখতে পারছি না।
- অ এই কথা। তা ওরকম হয় ভাই। মাঝে মধ্যে বর্ণ গুলো একটু গুলিয়ে যায় বটে। তা পাঁচুর দোকান থেকে একটা বর্ণপরিচয় কিনে নিয়ে দুদিন অভ্যেস কর সব ঠিক হয়ে যাবে।
- শালা মারব এক চড়।
- কেন কি হল আবার !
- আরে আমার খুব গল্প কবিতা লেখা পাচ্ছে কিন্তু হচ্ছে না।
- অ মানে মন বলছে লিখব লিখব কিন্তু হাত দিয়ে লেখা বেড়চ্ছে না। তাই তো ?
- সেটাইতো বলছি। ভাই তুইতো লিখে বেশ নামটাম কামিয়েছিস কিছু একটা উপায় বল।
- উপায় তো কিছু নেই ভাই। মাঝে মধ্যে আমারও হয়। একে বলে রাইটার্স ব্লক।
- 'এ' ব্লক 'বি' ব্লক শুনেছি এ আবার কি জিনিস ভাই।
- মাঝে মধ্যে ওমন হয় । চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে।
ও তো বলেই খালাস। আমার মনে কি যে হচ্ছে কি করে বোঝাই বলুন তো। তা সেদিন খবরের কাগজে এক জ্যোতিষির বিজ্ঞাপন দেখলাম । উনি নিমেষের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান করে দেন। দক্ষিণা ১০১ টাকা। তা ছুটলাম জ্যোতিষির কাছে।  হাত নিয়ে বেশ করে টিপে টেনে বললেন চিন্তা করবেন না সব সাংসারিক ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবেন আর আপনার স্ত্রীও আপনার কাছেই ফিরে আসবে শুধু একটা গোমেদ আর মুন স্টোন লাগবে। ১০১ টাকা ছুঁড়ে দিয়ে ওখান থাকে দে দৌড় এ ব্যাটা বলে কি। স্ত্রী গেল কখন যে ফিরে আসবে ! সারাক্ষন তো গায়ে লেপটেই আছে।  কিন্তু মনের অস্বস্তি বেড়েই চলে। সেদিন  আপিস থেকে ফেরার পথে বাসে দেখলাম এক তান্ত্রিকের বিজ্ঞাপন সাঁটানো আছে। কি মনে হল ঠিকানাটা লিখেই নিলাম। শনিবার আপিস হাফবেলা ছুটি তাই ছুটির পর পৌঁছে গেলাম তান্ত্রিকের ঠিকানায়। ঘুপচি গলির মধ্যে আধো অন্ধকার ঘরে বাবা বসে আছেন। সামনে লাল সিঁদুর মাখানো মড়ার খুলি। খুলির মাথায় দুটি মোমবাতি জ্বলছে। হাত জোড় করে বাবার সামনে গিয়ে বসে বললাম বাবা বড় বিপদে পড়েছি । মানে কি ভাবে যে আপনাকে বুঝিয়ে বলব ঠিক বুঝতে পারছিনা। বাবা আমায় হাতের ইশারায় থামিয়ে দিলেন। বেশ কিছুক্ষন এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকলেন তারপর মা মা বলে বিকট শব্দে এমন  চেঁচিয়ে উঠলেন যে আমার ভিমড়ি খাওয়ার জোগার। তারপর গম্ভীর স্বরে বলে উঠলেন বেটা তোর তো কালসর্প যোগ চলছে। তার জন্যেই এত. দূর্ভোগ। চিন্তা করিস না শুধু একটা যজ্ঞ করে বগলামুখী কবচ ধারণ করলেই সব দূর্ভোগ কেটে যাবে। সামনের আমাবশ্যায় যজ্ঞ হবে। এই হাজার পাঁচেক মতো খরচা। এখন হাজার দুয়েক দিয়ে যা । বললাম বাবা আমি কাল পুরো টাকা নিয়ে আসব এখন এই প্রনামী টুকু গ্রহন করুন। এই বলে ৫১ টাকা মড়ার খুলির সামনে রেখে এক ছুটে বাইরে এসে হাঁপ ছাড়লাম। তারপর বাড়ির কাছে এসে এই পার্কে বসে মনটাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলাম তা দিলে সব ভুন্ডুল করে। এবার চল মন নিজ নিকেতনে।
ঘড়ে পা দিতেই গিন্নীর প্রশ্ন বান ধেয়ে এল
- বলি ছিলে কোন চুলোয়। যেখানে ছিলে সেখানে বাকি রাতটুকু কাটিয়ে আসতে পারতে।
- না মানে আপিসের একটা মিটিং ছিল ( সত্যি কথা বললে কি হবে ভগাই জানে)
- মোবাইল নেই?  ফোন করে বলা যায় না ?
- না মানে
- থাক আর মানে বোঝাতে হবে না। বুঝি বুঝি সব বুঝি। আপিসের সুন্দরীদের ছেড়ে দাসী বাঁদীর কথা মনে থাকবে কেন।
লে খ্যাপা এবার সামলা।
রাত বাড়লে আবার আমার গিন্নীর সোহাগ বাড়ে। তার সাথে বাড়ে আবদারের ফর্দ। আজ সেই সুরেই চলছিল সবকিছু। আমি হয়তো মনের জ্বালায় একটু অন্যমনষ্ক ছিলাম। হঠাৎ দেখি সব চুপচাপ। বৌ দেখি আমার দিকে সরু চোখে তাকিয়ে। আমি বললাম কি হল।  বৌ বলল কি ব্যাপার বলতো কয়েকদিন ধরে দেখছি সব সময় কি ভেবে চলেছ। তোমার সাথে আমার ঝগড়া হয় লেখার খাতায় মুখ গুঁজে থাকার জন্য। তা সেই খাতাও কদিন ছুঁয়ে দেখনি। কি ব্যাপার কি ! প্রেমে পড়েছ?  পড়লে বলে ফেল আমি বাপের বাড়ি চলে যাব তারপর তুমি তাকে নিয়ে ফুচকা খাও সিনেমা দেখ যা খুশি কর। আর তা না হলে বিবাগী হয়ে বিদেয় হও, জীবনটা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দিল। আমি হাঁ করে বসে রইলাম । আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই বৌ পিছন ফিরে শুয়ে পড়ল। মনটা আরও অশান্ত হয়েগেল। দুত্তর, শালা এর থেকে বিবাগী হয়ে যাওয়া অনেক ভালো। হঠাৎ ভোর রাতে ঘুমটা ভেঙেগেল। ঘড়িতে দেখলাম রাত তিনটে বাজে। ঠান্ডা এবার বেশ জাঁকিয়ে পরেছে। জানলার কাঁচের ওপার কুয়াশায় ঢাকা। কি জানি হঠাৎ মনটা কি হল চুপিচুপি জামা কাপড় পরে বেড়িয়ে পড়লাম। কোথায় যাব জানি না। না না জীবন ভোর বিবাগী হওয়া আমার দ্বার হবে না। মনে হল অন্য কোথাও যদি মনটাকে খুঁজে পাই একবেলার বিবাগী হয়ে। রেল স্টেশনে এসে চেপে বসলাম লোকাল ট্রেনে। ট্রেনের শেষ গন্তব্য পর্যন্ত টিকিট কেটেছি। যত দূর যেতে ভালো লাগে যাব না হলে নেমে ফিরতি ট্রেন ধরব।
সূর্য ওঠার আগের সময়টুকু যে এত সুন্দর হয় তা একপ্রকার ভুলেই গিয়েছিলাম। খুব ছোটবেলায় বছরে একবার ভোর দেখার সুযোগ হত পুজোর আগে মহালয়ার দিন। মা ঘুম থেকে তুলে দিত। জবুথবু হয়ে মা-বাবার সাথে রেডিওতে মহালয়া শুনতে শুনতে দেখতাম অন্ধকার সরিয়ে ধীরে ধীরে ভোরের আলো ফুটে উঠছে। আজও ট্রেনের জানলা দিয়ে কুয়াশা ঢাকা প্রকৃতির দিকে চেয়ে আছি প্রথম ভোরের আলো দেখব বলে। ট্রেনে লোকজন বিশেষ নেই। ট্রেনের দরজার কাছে বস্তা বন্দি শাক সবজী সারি করে রাখা। যে কজন আছে তাদের কথা কান পেতে শোনার চেষ্টা করছি। কথা শুনে বুঝলাম তারা সবজীর পশরা নিয়ে কোন এক গ্রামের হাটে চলেছে। জানলার বাইরে  ধীরে ধীরে দিনের প্রথম আলো ফুটে উঠছে। হঠাৎ অনুভব করলাম মনের উপর থেকে একটা অদৃশ্য আবরণ আস্তে আস্তে সরে যাচ্ছে। কিছু স্মৃতি মনের গভীর থেকে উঁকি মারছে।  ছোটবেলায় শীতের ছুটিতে আমরা দেশের বাড়ি যেতাম। ভোরবেলা না হলেও বেশ সকাল করেই বাবার সাথে বাজারে যেতাম। বাজারে গিয়ে প্রথম কাজ ছিল খেজুর রসের সন্ধান করা। দীর্ঘদিনের শহুরে অভ্যাসে আজ সে সব কোথায় যেন হারিয়ে গেছে।নিত্যদিন বেঁচে থাকার শহুরে লড়াইয়ের যাঁতাকলে পিষে মনের আবেগ গুলো কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। এলোমেলো অনেক কথাই মনে আসছিল। হঠাৎ একটা কোলাহলে চমকে উঠে দেখি ট্রেন একটা স্টেশনে এসে দাঁড়ালো । যে যার নিজের  সবজীর পশরা নিয়ে নামায় ব্যস্ত। স্টেশন বলতে  সেরকম কিছু নয়। জানলা দিয়ে দেখে মনেহল কোন গ্রামের ধার ঘেঁসে এই স্টেশন। স্টেশন থেকে একটু দূরে চোখ গেল। দেখলাম বেশ অনেকটা জায়গা জুড়ে খোলা আকাশের নিচে বেচাকেনা চলছে। মন বলল চলো এখানেই নেমে যাই। তাড়াহুড়ো করে স্টেশনে নামতেই ট্রেন ছেড়ে দিল। নেমে তো পরলাম কিন্তু এখানের লোকজন কি ভাববে কে জানে। তারপর মনেহল হাটেতো যে কেউ আসতে পারে অতএব নির্ভয়ে চল মন। হাটের মধ্যে দেখলাম হরেক রকম পশরা নিয়ে বেচা কেনা চলছে। সুপার মার্কেট বা শপিং মলের মত বৈভব হয়তো নেই তবে একসাথে এতরকম পণ্যের বেচাকেনা শপিং মল কেও লজ্জা দেবে। আমার ছেলেবেলা যেন আমার হাত ধরে আমাকে টেনে নিয়ে চলেছে। হাটের একপাশে দূরে একজনকে কালো কালো হাঁড়ি নিয়ে বসে থাকতে দেখে মনটা আনন্দে নেচে উঠল। দৌড়ানোর বয়স নেই তাই পা চালিয়ে পৌঁছেগেলাম। হাঁড়ির দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে হাঁড়ির মালিক বলল খাবেন নাকি বাবু। হাঁড়ির মালিকের বয়স আমার থেকে বেশ কয়েক বছর বেশিই হবে। অভ্যাস বসত বললাম ভালো হবে তো। বললে একদম টাটকা আর এখানে ভেজাল রস পাবেন নি বাবু। বললাম তাহলে দাও। কাঁচে গাল্সে করে এগিয়ে দিল। আমার ছেলেবেলার আর তরসই ছিলনা। তাড়াতাড়ি চুমুক দিতেই এক ঝলক ঠান্ডা আমেজ সারা শরীরে ছড়িয়ে পরল। এক গ্লাস শেষ করেই আবার এক গ্লাস নিলাম। কথায় কথায় জানলাম ওর নাম বলাই। পয়সা মিটিয়ে হাটের মাঝে চলে এলাম। সবাই ব্যস্ত কেউ কিনতে ব্যস্ত কেউ বেচতে। আমার না আছে কিছু বেচার না আছে কেনার।  সেই কোন ভোররাতে বাড়ি  থেকে বেড়িয়েছি। কেউ জানে না শুধু একটা চিরকুট লিখে রেখে এসেছি "একবেলার জন্য বিবাগী হলাম" । চিরকুটটা টেবিলে রেখে বৌয়ের মোবাইল চাপা দিয়ে এসেছি। এখন এই এক সুবিধে বাড়ি থেকে বেড়লেও কেউ জানতে পারবে না শুধু দরজায় সাঁটা লকটা টেনে দিয়ে চলে এসো ব্যাস। বেলা বাড়তেই খিদেটা চাগার দিয়ে উঠল। এক ঠোঙা মুড়ি আর তেলেভাজা নিয়ে হাটের পাশে পুকুর পাড়ে এসে বসলাম। শহরের যান্ত্রব কোলাহলের লেশ মাত্র নেই এখানে। শুধু মাঝে মধ্যে ট্রেনের আওয়াজ কানে আসছে। মনটা এখন বেশ শান্ত লাগছে। মনের সেই জমাট অস্বস্তিটা এখন আর অত টের পাচ্ছি না। চোখটা একটু লেগে গিয়েছিল।হঠাৎ ট্রেনের আওয়াজে তাকিয়ে দেখলাম বেলা বেশ পড়ে এসেছে। ঘড়িতে দেখলাম ১২টা ১০ বাজে। হাটের দিকে এগিয়ে গেলাম । এক জায়গায় খাবারের দোকান দেখে এগিয়ে গেলাম। মাটিতে সারি দিয়ে বসে কলাপাতায় ভাত খাচ্ছে অনেকে। আমিও বসে পড়লাম। পাশের জন বলল বাবু খরিদারি হলেক। তাকিয়ে দেখি বলাই। বললাম তা হল বটে। বলাই বলল তা কি কিনতে এয়েছিলেন বাবু। বলাইকে বললাম "ছেলেবেলা" । বলাই দেখলাম মুচকি মুচকি হাসছে আর মাথা নাড়ছে। বললাম হাসছ কেন? বললে মন খারাপ হলি আবার চলি আসবেন। ইখানে মন ভালো করনের জাদু আছে। ই গাঁয়ের হাওয়া বাতাস সবাইকে আপন করে নেয় গো বাবু। খাওয়ার পর আর বলাইকে দেখতে পেলাম না হয়তো সে নিজের ঘরে ফিরে গেছে। এখনো হাটে বেচাকেনা চলছে। দিনের আলো কমে এলেই সব ঘরে ফিরে যাবে। পড়ন্ত বেলায় আবার পুকুর ঘাটে এসে বসলাম। পুকুরে বেশ কয়েকটা শালুক রয়েছে। সন্ধ্যে নামলেই পাপড়ি মেলবে শালুক। মনের মধ্যে এক অদ্ভুত শান্তি অনুভব করছি। কতক্ষন এভাবে বসেছিলাম জানিনা। হঠাৎ কেউ ডেকে বলল বাবু সন্ধ্যে প্রায় নেমে এলো। তাকিয়ে দেখি বলাই। বললাম তুমি বাড়ি যাও নি। বলল এইতো এবার যাব। আপনিও চলুন না হলে ফিরতি ট্রেন পাবেন না। বললাম হ্যাঁ চল। যাওয়ার আগে পুকুরের দিকে তাকিয়ে দেখলাম শালুক পাপড়ি মেলছে।
ফিরতি ট্রেনে বসে আজ নিজেকে অনেক হালকা লাগছে।  মনের অস্থিরতা কোথায় যেন গায়েব হয়েগেছে। সকাল থেকে মোবাইল বন্ধ ছিল। এখন চালু করতেই দেখলাম বৌয়ের দশ পনেরোটা মিসকল।  মনটা একটু আদ্র হল। বৌকে ফোন করতেই ঝাঁপিয়ে পড়ল গরমাগরম দু চার কথা বলার পর শান্ত হয়ে বলল কোথায় তুমি । বললাম এই তো বাড়ি ফিরছি। বলল তাড়াতাড়ি বাড়ি আসো। বললাম এই তো আসছি, তোমায় ছেড়ে যাব কোথায় ! ফোনের অপর প্রান্ত চুপচাপ শুধু হালকা কান্নার আওয়াজ। আজ অনেকদিন পর খুব সহজেই মনের মধ্যে কটা শব্দ খেলা করে গেল -

জীবন মানে সন্ধ্যেবেলা
শালুক হয়ে ফোটা,
জীবন মানে দিনেরবেলা
তপ্ত রোদের ছটা।
জীবন মানে নীল আকাশে
মুক্ত ডানা মেলা,
জীবন মানে নদীর বুকে
কলাগাছের ভেলা।
জীবন মানে ওষ্ঠ জুড়ে
অধর সুধার আবেশ,
জীবন মানে দুটি দেহের
সৃষ্ঠি সুখের রেশ।
জীবন মানে হয়তো রঙীন
হয়তো সাদা কালো,
জীবন মানে হাওয়ায় দোলা
সাঁঝবাতির আলো।
জীবন মানে অনেকটা পথ
একসাথে চলা,
জীবন মানে তোমার আমার
গল্প-কথা বলা।
জীবন মানে ভালো থাকা
আপনজনের জন্য,
জীবন মানে অঙ্ক কষা
মিলবে শেষে শূন্য।

********* সমাপ্ত ***********


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ছোট্টবেলার ছড়া

আগমনী

দুঃখ বিলাস