পোস্টগুলি

এক পেয়ালা চা

এক পেয়ালা চা সুদীপ্ত চক্র এসো আজ কিছুক্ষণ অপরিচিত হই দুজনে, পরিচিত হই গোপনে জমা ইচ্ছার সাথে, শুধু সাক্ষী থাকুক পেরিয়ে আসা পথ। ভ্রান্তি মুছে শুরু হোক পথচলা, তুমি-আমি, এক পেয়ালা চা আর কিছু অভিযোগ। কিছু অভিমান, কিছু অভিযোগ, সময়ের নাগপাশে বন্দী জীবন, যেমন ধানের শীষে জড়িয়ে থাকে শিশির। শুরু হোক শব্দহীন আলাপ, আমি-তুমি, এক পেয়ালা চা আর একটুকরো নির্জনতা। কিছু স্বপ্ন আবছা হয়ে যাক, কিছু না-পাওয়া থাকুক আজীবন, এক জীবনে সবটুকু পেতে নেই। শুরু হোক আরএক জীবনের অপেক্ষা,  তুমি-আমি, এক পেয়ালা চা আর স্বপ্ন দেখার মন। তুমি পাশে এসে বসলে ভোরের কুয়াশার নরম গন্ধ পাই, নিভে আসা গোধুলির আলোয় নতুন ভোরের গল্প শুরু হোক, আমি-তুমি, একপেয়ালা চা আর শিশির ভেজা স্বপ্ন।                              

জলছবি

জলছবি সুদীপ্ত চক্র আস্ত একটা দিন শেষ হয়ে যায়, কিছু বঞ্চনা  কিছু প্রতিবাদ, অস্তমিত সূর্যের আলোয় জলছবি এঁকে যায়। যে দীঘির জলে মুখ দেখত চাঁদ  একটা গোটা রাতের ষড়যন্ত্রে  কমে আসে তার পরিসর, একদিন প্রতিদিন। ব্ল্যাকবোর্ডে কষে রাখা গুণ ভাগ, কাঠের বেঞ্চে ভেসে আসে ভাতের গন্ধ, পাতে পরার আগে ভাগ হয় ভাতের মূল্য, মূল্যবোধ। ঝোলা কাঁধে পরিযায়ী, রাজপথে হবু মাষ্টার, অনন্তশয্যায় প্রভু, ক্যানভাসে মিশে যায়, তবু চায়ের কাপে তর্ক জমে না, দেশলাই খোঁজে জনগণ। তবু আবডালে ক্ষোভ জমে প্রতিদিন, বুকের পাঁজরের স্তরে স্তরে জমা আছে বারুদ, শুধু মেরুদন্ডে আগুন জ্বালানো বাকি।

অলীক প্রেম

 অলীক প্রেম ব্যস্ত সময়, ব্যস্ত পথ, মানুষগুলোও ব্যস্ত অতি, তার থেকেও ব্যস্ত অনেক পাগলীটার মতিগতি। ব্যস্ত জীবন খাবার খোঁজে পথের ধারে আঁস্তাকুড়ে, হঠাৎ সেদিন একটা পাগল উড়ে এসে বসল জুড়ে। দুজনেতে খাবার খোঁজে, হয়তো তাদের ভাব হয়েছে, আড়চোখে তাকায় পাগল, পাগলীটারও বুক রয়েছে। নিঝুম রাতে পাগলী ঘুমায়, পাগল তাকে আড়াল করে, সজাগ থাকে হঠাৎ যদি হায়নাগুলো খামচে ধরে। একসকালে ব্যস্ত গাড়ি ছিটকে ফেলে পাগলটাকে, ব্যস্ত মানুষ সেইখানেতে নিজস্বীতে মগ্ন থাকে। আর্তস্বরে পাগলী তাকে জড়িয়ে ধরে বুকের মাঝে, ঝাপসা চোখে পাগল দেখে মন রয়েছে বুকের ভাঁজে।

ঘুম ভাঙার পর

  ঘুম ভাঙার পর    #সুদীপ্ত_চক্র ঘুম ভাঙার পর নতুন সূর্য্যের প্রত্যাশায় দিগন্তের কাছে শুধু বিবর্ণ কুয়াশা। তবু নতুনের আবাহনে পথ চেয়ে থাকা, পুরাতন বারেবারে কড়া নাড়ে দরজায়। ভুলে থাকা এতই কি সহজ! ভুল শুধরে নেওয়া সহজ নয়। মিথ্যের মোড়কে জড়িয়ে থাকা জীবন তীব্র কালকূট সংশ্লেষ করে চলে। শুধু দিগন্তে কিছু নীল রঙ মিশে যায়, চোখের পাতায় তবু স্বপ্নেরা খেলা করে। ঘুম ভাঙার পর স্বপ্ন ভাঙার পালা, স্বপ্ন আর সত্যের ফারাক বিস্তর। সক্রেটিসকে ভুলে গেছি আজ, শুধুু বুকের ভিতর হেমলকের উত্তরাধিকার। অ্যাসক্লেপিয়াসের ঋণশোধ সম্পূর্ণ এবার জেগে ওঠার পালা। এনিটাসের দেহে মিশে যাক নিউরোটক্সিন, দিগন্তে ছড়িয়ে পরুক সূর্যের আভা, তারপর ঘুম ভেঙে স্বপ্নেরা দেখুক, কুয়াশার ক্যানভাসেও রামধনু আঁকা যায়।

মন পথে

শীত কুয়াশায় হালকা প্রতিছবি, হালকা রোদে অস্পষ্ট সব, স্মৃতিরা সব রোদ মাখতে আসে, সন্ধ্যা নামলে শান্ত কলরব। কাল ভাবনায় মগ্ন যখন মন, অসময়ে কড়া নাড়ে না কেউ, হঠাৎ যদি স্মৃতি বান্ধব আসে, মনের আগলে ধাক্কা দেবে সেও। কেউ রাখেনা ছুঁয়ে দেওয়া কথা, সব মুছে দেয় ভোরের শিশির ধারা, স্মৃতি বান্ধব তোমার কথা থাক, আজকে আমার আগামী খোঁজার তাড়া। লোল চামড়ায় লালচে কালো ছোপ, জানি, নতুন করে মন দেবেনা কেউ, মন আগলে মকরমুখী কড়া, বুক পাঁজরে অযুত কথার ঢেউ। কথারা সব স্বপ্নে আসন পাতে, সবার হাতে শব্দের বরমালা, কবিতার চোখে ঘন কাজল আঁকা, কবির হাতে কাব্য বরণডালা।

অবচেতন মন

# অবচেতন মন # সুদীপ্ত চক্র ব্ল্যাকহোলে বিলীন হওয়ার আগে জেগে উঠতে চাই চেতনার বিষ্ফোরণে। প্রজাপতির ক্লান্ত ডানায় লেগে থাকুক একটুকরো হিমশীতল ভোর, কম্বলের নিশ্চিন্ত ওম ছেড়ে কুয়াশা কে বা গায়ে মাখতে চায়! স্বপ্নেরা জব্বর স্বপ্ন নিয়ে আসে, রাতের করিডোরে সরীসৃপ হয় মন। চেতন-অবচেতনের মাঝে প্রেয়সীর বাস, নিষ্ঠুর পৌরুষে দেবত্ব খোঁজে আজও। অবচেতনে তবুও সকাল আসে বাজারের থলিতে ফরমায়েশের ভিড়ে। চালশের কাঁচে ঢাকা চোখে নিজের হারিয়ে যাওয়া চৈতন্য খুঁজি। ব্যস্ত রবিবারের ভিড় ঠেলে রহমতের দোকান থেকে মাংস, সুধীরের রসগোল্লা, পিটারের পেস্ট্রি নিয়ে ঘরে ফেরার পথ ধরি। বাজারের থলিতে অচেতনে ঘুমায় চেতনা, শুধু জেগে থাকে একটুকরো ভারতবর্ষ।

ভালোই আছি

 মারকাটারি কাটছে জীবন ভালোই আছি বেশ। মাসকাবারি টানাটানি, বুকের নিচে টনটনানি, তবুও আছি বেশ। মাস-পয়লার রাজা-উজির, দুদিন পরেই পথের ফকির, কাটছে জীবন বেশ। ঝুলিয়ে মুখে মেকি হাসি, বুকের মাঝে দুঃখ পুষি, এইতো আছি বেশ। একটুখানি ঝগড়াঝাটি, টকাস্ করে টাগরা চাটি, স্বাদখানি তার বেশ। ইস্পাত নয় মিছরি ছুরি, কাটছে জীবন আড়াআড়ি, চলছে সময় বেশ। টক-মিষ্টি রস টুপটুপ খাচ্ছি জীবন বেশ।

ক্ষয়

ক্ষয়ে যাচ্ছে সময় ক্ষয়িষ্ণু এ মন, সময়ের পিছুডাকে মনের ঊর্দ্ধে ওঠা হলো না। হাজার আলোর ভীড়ে প্রদীপের খবর কে রাখে! নিজেকে নিঃস্ব করে কাজল হতে কে বা চায়! সবুজ ঘাসে নামে হলুদ বৃষ্টি, ছাতিমতলায় শুধু বারুদের গন্ধ, পলকহীন বুভুক্ষু চোখ, পোড়া ধুলায় পায়রা আঁকে শৈশব। অতঃপর। মনের প্রশান্তিতে ছুঁড়ে দিই বিস্কুট, ক্ষুধার্ত চোখে। হাত ধরে দাঁড়িয়ে থাকা শৈশব শিখে যায় চকোলেট লুকোতে।