নববর্ষের বৈঠক

আজ একটু তাড়াতাড়ি ঘুমটা ভেঙেগেল সুতনুর ঘড়িতে দেখল ৫টা বাজে নাঃ এই গরমে ঘুমের দফারফাআজ আর ঘুম হবে না কাল রাতে শুতে যাওয়ার আগে ভেবেছিল  সকালবেলা উঠে হোয়টস্ অ্যাপ গ্রুপে জব্বর একটা ম্যাসেজ করতে হবে নববর্ষ বলে কথা  
তাই আজ তাড়াতাড়ি ঘুমটা ভেঙে যেতে বাথরুমের কাজ সেরে চা আর মোবাইলটা নিয়ে বারান্দায় এসে বসল এখন ৬টা বাজে হোয়াটস্ অ্যাপ গ্রুপটা অন করতেই এক ঝাঁক ম্যাসেজ এসে ঢুকল পুরানো বন্ধুদের গ্রুপ কেউ  নবর্ষের কার্ড পোষ্ট করেছে কেউ ছোট্ট দু-এক লাইনের শুভেচ্ছাবার্তা  তারপর যে ম্যাসেজ গুলো দেখল সেগুলো দেখেই একরাশ বিরক্তি সুতনুকে গ্রাস করল কে আজ কোথায় নববর্ষ সেলিব্রেট করবে কি তার মেনু তার ফিরিস্তি কেউ কেউ আবার সম্ভাব্য খরচের হিসেবনিকেশ  দিয়ে দিয়েছে সুতনুর আর কিছু শুভেচ্ছা বার্তা লেখার ইচ্ছে হলনা  
শুধু লিখলবাঃ বেশ ভালো 
 সাথে সাথে রজ্ঞনের রিপ্লাই এল                                                                  
- শুধু ভালো !  ব্যাস!  আরে তোর আজকের প্ল্যান কি সেটাতো বল                                                               
 সুতনু লিখল - আজ আমার অফিস
- সেকিরে  ! আজ অফিস  ! অবশ্য আমার অফিস  আছে তবে  আজ বসের জন্মদিন সুতরাং সারাদিন মস্তি, রাতে গ্রান্ডে পার্টি
সুতনু আর কিছু লিখল না। হোয়াটস্ অ্যাপ বন্ধ করেদিল
সকালবেলার চা টাও কেমন যেন বিস্বাদ লাগল। না হিংসা বা ঈর্ষা নয় , নিজের অক্ষমতার জন্য নিজেই নিজের উপর বিরক্ত হল। প্রাইভেট কম্পানীর কন্ট্রাক্টচুয়াল চাকরি। যা মাইনে পায় তাতেও সংসার খরচ কুলায় না। তাই উত্ সবের দিনগুলিতে স্ত্রী-মেয়ে নিয়ে রেস্তরায় যাওয়ার সাধ থাকলেও সাধ্য নেই। সুতনুর সমসাময়িক বন্ধুরা আজ উচ্চপদে চাকরিরত। অথচ ছাত্রজীবনে সুতনু পড়াশোনায় ওদের সমকক্ষই ছিলহয়তো একটু বেশীই ছিল। আজ শুধু ভাগ্যের দোহাই দিয়ে নিজের অক্ষমতাকে লুকানো ছাড়া আর কিছু করার নেই তার। মাঝে একবার বন্ধুদের এই হোয়াটস্ অ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে দিয়েছিল,  কিন্তু বন্ধুদের জোড়জুড়িতে আবার জয়েন করে
এসব ভাবতে ভাবতেই সুপর্ণা এসে একবার তাড়া দিয়ে যায়কি গো শুধু বসেই থাকবে  ! আজ কি অফিস বন্ধ. !
না এই যাই
এই যাই বলেও সুতনু আরো কিছুক্ষণ বসে   ইল  
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়াল। গামছা কাঁধে নিয়ে ধীরেধীরে বাথরুমে গিয়ে ঢুকল। স্নান সেরে চুল আঁচড়াতে আঁড়াতে  সুতনু বুঝতে পারলো মেয়ে উঠে পড়েছে। এই বছর মাধ্যমিক দিয়েছে তনুশ্রী
টুংটাং আওয়াজ পেয়ে সুতনু একবার আড়চোখে তাকালো। দেখলো মেয়ের হাতে সদ্য কিনে দেওয়া মোবাইল।    
 তনুর আবদার মেটাতেই সস্তার মোবাইলটা কিনে দিয়েছে সুতনু
আসলে মেয়েকে সেভাবে কোনদিন কিছু দেওয়া হয়নি তার। পরীক্ষার শেষে মেয়ের আবদার             
 - আমাকে একটা মোবাইল কিনে দেবে বাবা?   
সুতনু না বলতে যাচ্ছিল কিন্তু সুর্পণার দিকে চোখ পড়তেই চুপ করে গেল।
সুপর্ণার চোখদুটি যেন বলছিল মেয়ের এই আবদারটুকু অন্তত রাখো।       
 সুতনু মেয়ের মাথায় বুলিয়ে বলেছিল, আচ্ছা দেখি কি করতে পারি
পরদিন সন্ধেবেলা অফিস থেকে ফেরার পথে এই সস্তার মোবাইলটা কিনে এনে মেয়েকে দিয়ে বলল বুঝতেইতো পারছিস মাএর থেকে বেশি আর পারলাম না
মেয়ে মোবাইল হাতে নিয়ে সুতনুর গালে গাল ঠেকিয়ে বলেছিল দারুণ হয়েছে বাবা।                সুতনু কিছু বলতে পারেনি শুধু অব্যাক্ত যন্ত্রনা বুকে নিয়ে সুপর্ণার দিকে তাকিয়েছিল
'তোমার জলখাবার দিয়েছি' জলখাবার দিয়েছি                        সুপর্ণার ডাকে সম্বিত ফেরে সুতনুর। ডাইনিং এর চেয়ারটা টেনে নিয়ে মুড়ির বাটিটা হাতে নেয়
খেতে খেতে আড়চোখে মেয়েকে দেখে যায় শুধু। মেয়ের মুখের অভিব্যেক্তি লক্ষ করে সে। বুঝতে পারে তনুও হোয়টস্ অ্যাপে বন্ধুদের সাথে মেতে রয়েছে। অন্যদিন হলে হয়তো সুতনু বারণ করতো।                                                        কিন্তু আজকের দিনে আর মেয়েকে কিছু বললনা
মুড়ির বাটিটা শেষ করে ওঠার সময় দেখলমেয়ে মুখে একরাশ বিরক্তি নিয়ে মোবাইলটা আলতো করে বিছানায় ছুঁড়ে দিয়ে উপুর হয়ে শুয়ে পড়ল
সুতনু বেড়বার সময় বললতনুমা আমি আসি রে                         মেয়ে দৌড়ে এসে সুতনুর পা ছুঁয়ে প্রণাম করল। মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল
কিরে কি হল,  আজ হঠা প্রণাম !
কি আবার হবে,  আজ নববর্ষতো তাই
তা আমার মায়ের মুখ ভার কেন ?
জানো বাবা কিছুকিছু মানুষ আছে যাদের মুখে সবসময় বড়বড় কথা আর দেখনদারী
সুতনু একটু হেসে মেয়ের গালটা টিপে দিয়ে অফিসের পথ ধরল
আজ অফিস যাত্রী একটু কম। সৌভাগ্যবসত বাসের জানলার ধারের সিটটা পেয়েগেল সুতনু। বাড়ি থেকে বেড়বার সময় মেয়ের বলা কথাগুলো বড় ভাবাচ্ছিল সুতনুকে।                     সত্যিতো আজকের এমন একটা দিনে সবাই কত আনন্দ ফুর্তি করছে। আর সুতনুর এমন  অবস্থা যে     স্ত্রী-মেয়ে নিয়ে এই দিনে একটু সখ আহ্লাদ করবে তার উপায়  নেই সামর্থ  নেই। মেয়ের মুখের অভিব্যেক্তিটা ঠিক আন্দাজ করতে পারছেনা। মেয়ে কি সত্যিই বন্ধুদের কথা বিরক্ত নাকি না পাওয়ার যন্ত্রনায় বিরক্তি প্রকাশ করছে ঠিক বোঝাগেল না
আজ অন্যদিনের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি অফিসে পৌঁছেগেছে সুতনু। দেখল গুটিকয়েক সহকর্মী হাজির হয়েছেবাকীরা এখন  এসে পৌঁছায়নি।  নিজের টেবিলে বসে রুমাল দিয়ে মুখটা মুছে নিল। বাইরে অসহ্য গরম। অফিস বয় রামু এসে একগ্লাস জল দিয়ে যেতেই ঢকঢক করে জলটা গলায় ঢেলে, ফাইল নিয়ে বসে পড়ল
- সুতনুদাকি এত কাজ করছেনকরছেনএইতো সবে অফিস শুরু হলএত তাড়া কিসের!
সঞ্জয়ের কথায় মুখ তুলে তাকাল সুতনু
- আরে না না,  সেরকম কিছু না। কাল শেষ বেলায় এই ফাইলটা বসের কাছ থেকে এসেছে।  সেটাই একটু দেখে রাখছি
- আরে ছাড়ুন তো দাদা, আজ আর বসের দেখা পাবেন বলে মনেহয় না
না তাও দেখে রাখি। যদি এসে পড়েন তো ঝামেলায় পড়ে যাবো
ওদিক থেকে আবীর টেবিলের কাছে এসে চোখ নাচিয়ে বলল
- আজ বৌদিকে নিয়ে কোথায় যাবেন ?
প্রশ্নটা শুনে একটু থমকে গেল সুতনু। এখানেও সেই একই গল্প !
একটু শুকনো হেসে বলল
কোথায় আর যাব ভাইসে বয়স কি আর আছেতারপর পকেটটাও তো দেখতে হবে
তা যা বলেছেন দাদা। আমাদের এই মাইনেতে সখ আহ্লাদ সব শিকেয় তুলে রাখতে হয়। এই নিয়ে আজ সকালে গার্ল ফ্রেন্ডের সাথে একচোট হয়েগেছে। আমি অফিস আছে বলে কাটিয়ে দিয়েছি
সে কিএখন থেকেই ঝগড়া  ! বল কি হে !
কি করব দাদাযা হাতে পাই তাতে কোন রকমে সংসারটা চলে
না না ভায়াতাকে বুঝিয়ে বললেই হত
সে চিন্তা করবেন নাকাল ঠিক ম্যানেজ করে নেব
এমন সময় রামু এসে বলেগেল বস আসছেন
যারা এতক্ষণ সুতনুর টেবিল ঘিরে আড্ডা জমিয়েছিলসব নিমেষের মধ্যে উধাও হয়েগেল।     
 সুশান্ত বলে উঠল শালা শান্তিতে একটু আড্ডা মারব তার  উপায় নেই
বস ঢুকতেই সবাই সমস্বরে বলে উঠল
গুড মর্ণিং স্যসর
মর্ণিং মর্ণিং, আপনাদের সবাইকে আমার  কম্প্যানীর তরফ থেকে শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাই
আপনারা হয়তো ভাবছেন আজকের দিনে হঠাত কেন আমি এই সময় চলে এলাম। এটা ঠিক যে সবের দিনগুলিতে আমি সাধারণত অফিসে আসি না  কিন্তু আজ একটা বিশেষ কারণে আমি এলাম বা বলা ভাল যে আসতে বাধ্য হলাম
বসের কথা শুনে সবাই একে অপরের মুখের দিকে তাকাতে লাগল
না না ভয় পাবেন না। ভয়ের কোন কারণ নেই। আসলে প্রতি বছর দেওয়ালীতে কম্প্যানী আপনাদের কিছু না কিছু উপহার দেয়। কিন্তু গত দেওয়ালীতে কম্প্যানীর অবস্থা খারাপ থাকার জন্য আপনাদের কিছু দেওয়া সম্ভব হয় নি। সেইজন্য আপনাদের মনে ক্ষোভ আছে তা আমি জানি। গত মাসে আমরা বেশ ভালো অঙ্কের লাভের মুখ দেখেছি। তাই আজ নববর্ষ উপলক্ষে আপনাদের প্রত্যেককে কম্প্যানীর তরফ থেকে উপহারের পরিবর্তে নগদ ৫০০ টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপনারা আমাদের ক্যাসিয়ারের কাছ থেকে তা পেয়ে যাবেন
সবার মনে এই অজাচিত খবরে একটু হলেও খুশির ছোঁয়া দেখাগেল
অফিস থেকে আজ একটু আগেই বেড়িয়ে পড়ল সুতনু। ৫০০ টাকা দিয়ে কি করা যায় ভাবতে ভাবতে সুপর্ণাকে ফোনটা করেই ফেলল।বললসুপর্ণা আজ অফিস থেকে হঠা ৫০০ টাকা পাওয়া গেল। তা ভাবছিলাম রাতে যদি একটু বিশেষ খাওয়-দাওয়ার আয়োজন করা হয় তো কেমন হয় !
অন্যদিন হলে সুপর্ণা হয়তো দু-চার কথা শুনিয়ে দিত কিন্তু কেন জানিনা আজ কিছু বলল না, শুধু বলল      - বেশতো তাই করো
বাড়ি ফিরে দরজায় তালা দেখে সুতনু একটু ধন্ধে পড়ে গেল।                     এই সন্ধেবেলা মা-মেয়ে গেল কোথাযসুতনুর ব্যাগে বাড়ির একটা চাবি সবসময় থাকে। খুঁজেপেতে সেটা বারকরে,  ঘরে ঢুকে হাতের জিনিসগুলো নামিয়ে রাখল। জামাকাপড়র ছেড়ে ফ্রেস হয়ে সে কিনে আনা জিনিসগুলো একেএকে ডাইনিং টেবিলের উপর সাজিয়ে রাখল। এমন সময় দরজার কড়া নাড়ার আওয়াজে উঠেগিয়ে দরজা খুলে দেখল মা-মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়ে সুতনুকে প্রায় ঠেলে সরিয়ে ঘরে ঢুকে চেঁচিযে উঠল
- বাবা এসব কি এনেছো !
কিছু না রে মা, ভাবলাম আজ তোকে কিছু নিজে হাতে রান্না করে খাওয়াই। তাই আরকি
পারবে তো  ?
- পারবো রে পারবো তুই শুধু একটু হেল্প করে দিবি
সুপর্ণা কিছু না বলে বাপ মেয়ের কথা শুনে হাসতে লাগল
হ্যাঁরে মা তোরা দুটিতে কোথায় গিয়েছিলি ?
দেখেছোতোমাকেতো বলাই হল না। জানো বাবা আজ না খুব মজা হয়েছে
কিসের মজা রে  !
এই দেখোনা দু-দুটো মিষ্টর প্যাকেট পেয়েছি
কে দিলো রে  ?
- আরে আমরা যে দোকানে মাসকাবারী জিনিস নিইতারা দিলো। অন্যবার তো তুমি গিয়ে নিয়ে আসো। এবারে মা বলল চল তনু আমি আর তুই যাইতোর বাবা বাজার করে আসবে দেরী হবে। তাইতো আমি আর মা গেলাম
তা দুটো প্যাকেট কেন. ?
দোকানের আঙ্কেল বললতুই প্রথমবার এলি তাই একটা তোর জন্য আরেকটা তোর মা-বাবার জন্য
তাই !
হ্যাঁ বাবাজানো আবার কোল্ড ড্রিংক্স  দিল
বাঃ,  খুব মজা হয়েছে বল?
- খুউব
নে এবার তাড়াতাড়ি জামা চেঞ্জ করে এসে আমাকে হেল্প কর
দেখতে দেখতে অনেকটা সময় পেরিয়ে গেল। তনুসুপর্ণা দুজনেই সুতনুর সাথে রান্নাতে মেতে উঠল
তনু হেল্প করছে কম,  মোবাইলে সেলফী তুলছে বেশী
আয়োজন তেমন কিছু না, ফ্রায়েড রাইস আর চিকেন কষা
আজ গরমটাও যেন অতিরিক্ত পড়েছে। খাওয়ার পর তিনজনেই ছাদে এসে বসলো। তিনজনের মুখেই মৃদু হাসি
তনু হঠাত বলে উঠল - আচ্ছা বাবা তোমার ছোটবেলাতে নববর্ষ কেমন ছিল. ?
কেমন আবার এই সারাদিন হৈ-হুল্লোড়,  খাওয়া-দাওয়া। আর হ্যাঁ নববর্ষের বৈঠকী আড্ডা বসত। সবাই মিলে গল্প করাগান করাকবিতা বলা। সন্ধেবেলা বাবার হাত ধরে দোকানে দোকানে ঘোরা আর মিষ্টি খাওয়া
- আচ্ছা বাবা মা বলছিল তুমি নাকি আগে গান করতে  !
- ধুরওসব চানঘরের গান
বাবা একদিন গান শোনাবে আমায়  ?
- আচ্ছা ঠিক আছে শোনাব একদিন
মা তুমি কিন্তু সাক্ষী থাকলে
সুপর্ণা আজ আর কিছু বলে না শুধু হেসে যায়
তনু আবার ব্যাস্ত হয়ে পড়ে সেলফী তুলতে
সুতনু বলেওরে রাত হয়েছে, আর কত ছবি তুলবি  !
এগুলো ছবি নয় বাবা
- আচ্ছা আচ্ছা এগুলোকে তো সেলফী বলে
না বাবা
তাহলে  !
এগুলো আমার ভালোলাগার কিছু মুহুর্ত
সুতনু অবাক হয়ে যায়।  মেয়ে বলে কি  !
সুপর্ণার মুখে শুধু হাসিটুকু লেগে থাকে
সুতনু মেয়েকে বলেজানিস মা ভাবছি  সামনের মাস থেকে অল্প অল্প করে টাকা জমাবতারপর সামনের নববর্ষে আমরা সবাই মিলে একটা বড় রেষ্টুরেন্টে গিয়ে নববর্ষ সেলিব্রেট করবো
তনু কিছু বলে না। শুধু মোবাইলের আলোয় ওর মুখটা যেন আর  উজ্জ্বল লাগে
কি রে মাকিছু বললিনা যে!
বাবা তুমি আর মা সন্ধ্যে থেকে বলছিলে যে মেয়েটা একদম পাগল শুধু ছবি তুলে যাচ্ছে। জানো বাবা, ছবিগুলো আমি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলাম। ওরা কি বলল জানো  ?
সুতনু-সুপর্ণা মেয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে
ওরা বলল নববর্ষে বড় বড় রেষ্টুরেন্টে এসে আমরা শুধু হুল্লড় করলামপার্টি করলাম। একমাত্র তুই নববর্ষটাকে এনজয় করলি
আচ্চা বাবা এনজয়ের বাংলা কি  ?
উপভোগ
তুমি ঠিক  বলেছ বাবাসামনের মাস থেকেই আমি আমার ভাঁড়ে পয়সা জমাবো। তারপর সামনের নববর্ষে আরো বেশী করে এই মুহুর্ত গুলোকে উপভোগ করবতাই না মা  !
সুপর্ণার চোখ দুটি আদ্র হয়ে ওঠে। সে আলতো করে মাথা নেড়ে মেয়েকে জড়িয়ে ধরে
সুতনুর মনেহয় রাতের আকাশের তারা গুলো আজ যেন বড় বেশী জ্বলজ্বল করছে
*********** সমাপ্ত ************
সবাইকে শুভ নববর্ষের প্রীতি ও শুভেচ্ছা
১লা বৈশাখ ১৪২৩

মন্তব্যসমূহ

  1. রোজকার মতো এটা সেটা না করে প্রকৃত আনন্দ যে চাইলেই খুঁজে নেওয়া যায় তা এই মিস্টি গল্পটা পড়ে বোঝা গেল।

    উত্তরমুছুন
  2. আহা, বড় ভালো লিখলে!! তুমি বোধহয় ওই গুটিকয়েক লুপ্তপ্রায় লোকজনদের মধ্যে একজন যে এসব বোঝে! ☺ বড় ভালো লাগল পড়ে।

    উত্তরমুছুন
  3. আমি ইচ্ছে করে লেখাটা গতকাল পড়িনি। আজ পড়ব বলে। সুদীপ্তর লেখা আমি একটু সময় নিয়ে পড়ি। ঝট করে পড়ার মত লেখা এটা নয়। আমাদের জীবনে ছোটো ছোটো আনন্দগুলোকে আমরা অবহেলা করে , অন্য অজানা সুখের পেছনে ছুটি। মরিচিকার মত সে সুখ ধরা দেয়না। আর হাতের কাছে থাকা সোনার টুকরো মুহুর্ত গুলো হাতছাড়া হয়। বড় ভাল লাগল লেখাটা পড়ে। আমার জীবন দর্শনের সঙ্গে মিল খেলো। বড় বাড়ি, গাড়ি, দামী মোবাইল এসবের থেকে একটা ভারি সুন্দর লেখা পড়তে পাওয়া বা অলস সকালে বারান্দায় বসে এক কাপ চায়ে চুমুক দেওয়া, একটা নিটোল সাদা ডিম হাতের মুঠোয় ধরতে পারার মধ্যে যে আনন্দ, তার তুলনা হয়না। বড় ভাল লিখেছিস। নাড়িয়ে দিয়ে গেল লেখা ভেতর পর্যন্ত।

    উত্তরমুছুন
  4. তীব্রভাবে একমত হলাম তোর সাথে ,আনন্দের উপকরণ বেশী হয়ে গেলে আনন্দ টাই থাকে না , জীবনের ছোট ছোট এই আন্তরিক মুহূর্তের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে বাঁচার আসল মানে , যারা এটা বোঝে না তাদের জন্য করুণা হয় সে যত কেষ্ট বিস্টু ই হোক 😂😂

    উত্তরমুছুন
  5. লেখাটা পড়ে খুব ভাল লাগলো , অন্ন্যের আনন্দতে সামিল হতে পারলে ভাল, আর যদি না পারা যায় সামিল হতে , তখন নিজের আনন্দ নিজেই খুজে নিতে হয়। আর যে খুজে পায় সেই প্রকৃত সুখী। আর একটা ধ্রুব সত্য কথা হল মানুষের আনন্দ উৎসবের মাত্রা ঠিক করে সময়। সময় থাকলে সমস্ত কিছুই আনুকুল হয় এবং সময় না থাকলে কোটি টাকা ও আনন্দ দিতে পারে না । তাই কথায় আছে সময়ের আগে আর ভাগ্যের থেকে বেশি কেউ কিছুই পায় না। ......... যাই হোক খুব উচ্চ মানের লেখাটা লাগলো। ......... বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ছোট্টবেলার ছড়া

আগমনী

দুঃখ বিলাস