পোস্টগুলি

বন্ধু চল

চল, রেলগাড়ি সাজি রাস্তায়, আর, লাল লাঠি নিয়ে দৌড়াই, চল, ক্যারামের বোর্ডে ঝড় তুলি, ফিরি লুডোর ঘুঁটি ও ছক্কায়। চল সাত ঘুঁটি ভাঙি এক টিপে, ফের নতুন করে সাজাব, আর ক্লাসরুমে বসে গানের সুরে কাঠের বেঞ্চটা বাজাব। চল, দুপুর কেটে কাঠকুটো আনি নেড়াপোড়া বুড়ি সাজাব, আর সেই সেদিনের বান্ধবীদের এই বসন্তে  রাঙাব। চল, বর্ষার মাঠে কাদা মেখে সেই ফুটবল নিয়ে খেলব, বড় হওয়ার যন্ত্রনা ভুলে ছেলেবেলা ঠিকই ধরব, ঠিক ধরব।

আঁতেল

আরো এক উৎসব হলো শেষ আবেগেরা এবার বিশ্রাম পাক, আসবে আবার একটি বছর পর, ভাষাচর্চা! ততদিন শীতঘুমে যাক। রাশিরাশি গল্প কবিতা গান, আবেগেরা ছোটে পাল্লা দিয়ে, দিনের শেষে রণ ক্লান্ত হয়ে, অঙ্ক কষে পাওনা হিসাব নিয়ে। আশায় আছি মনের আশা নিয়ে প্রতিদিন যেন একুশের সূর্য্য ওঠে, গালমন্দ যতই করো আমায় আঁতলামি যে রক্তে আমার ছোটে।

ভালো নেই ভালোবাসা

ভালো নেই ভালোবাসা মনে ভারি কষ্ট, সন্মান ছিল যাহা পুরোটাই নষ্ট। প্রেম প্রেম চলে খেলা চলে শুধু ফন্দি, ক্ষনিকের আলাপে ক্ষনিকের সন্ধি। ফুল পাখি চাঁদ তারা নেই আজ খবরে, প্রেমিকের উপহার বাড়ে শুধু বহরে। বন্ধু যে কার কটা বান্ধবী কটা কার! এটাই সহজ কাজ শিরোনামে থাকবার। ভালোবেসে ডুবেছিল মদিরাতে দেবদাস, সাতপাকে বাঁধা পড়ে প্রেম করে হাঁসফাঁস। ভালোবেসে পরিণয় পুরুষে ও নারীতে, চারদিনে সাক্ষর বিচ্ছেদ পত্রে। ভালোবাসা গেল কোথা মনে লাগে দ্বন্দ্ব, ভেসে আসে বাতাসে প্রেম প্রেম গন্ধ। বেঁচে থাকে ভালোবাসা বৈশাখে - ফাগুনে, শুধু চাপা পড়ে যায় অভাবের আগুনে। হোক না সে যত ক্ষীন জীবনের আয় - ব্যয়, ভালোবাসা ভালোবেসে নিজেকেই বদলায়।

প্রেম কথন

আচ্ছা কাল আমায় কি দেবে ? কাল ! কেন কাল আবার কি ? ওমা তুমি কি গো !   কালতো প্রেম দিবস , ভ্যালেন্টাইন ডে। প্রেম দিবস ! প্রেমের আবার দিন ! ক্যালেন্ডারে নিয়মে প্রেম হয় নাকি ! ধুস তুমি না কি ! দেখছ না কত বিজ্ঞাপন শহর জুড়ে ! ওতো বিপণনী প্রেম !   তা হোক , তবু প্রেম তো ! প্রেম না খুড়োর কল ! নাকের ডগায় গিফ্ট ঝুলিয়ে   প্রেমের আহ্বাণ ।   তুমি আমায় ভালোবাস না ! বাসি তো প্রতিদিন ভালোবাসি । তোমার সাথে ঝগড়া করি যে ! সেটাও তো ভালোবাসা । ভালো না বাসলে ঝগড়া করবে কেন ! কেন ভালোবাস আমায় ? ভালোবাসি ভালোবাসি   তার আবার কারণ হয় নাকি ! ভালোবাসা নাকি অভ্যেস ! ভালোবাসাটাই তো অভ্যেস ।   তবে যে শহর জুড়ে এত আলোর   সাজ , রেস্তরায় এত বাহারী খাবার ! এত উজ্জ্বলতায় প্রেম হয় না ,   হয় শুধু প্রেম প্রেম খেলা । পুরানো বউয়ে মন ভরে না , তাই শুধু মিছে কথা আর কথার প্যাঁচ । মিছে কথা বলব কেন ? তবে কি প্রেম নেই ? আছে তো , সেই যে বাসন্তী শাড়...

তোকে দিলাম

অপূর্ণ স্বপ্ন পুরণের দ্বায়ভার নয় তোকে দিলাম স্বপ্ন দেখার স্বাধীনতা, বংশধারকের স্মারক নয়, জীবন হোক স্বপ্নপূরণের রূপকথা, তোর ইচ্ছেডানাতেই আমার স্বপ্নপূরণ, না হলে যে মিথ্যে রাজা সাজা, তুই যে আমার ইচ্ছে পরী তুই যে আমার আত্মজা।

খেজুর রস

- কি ব্যাপার মহিম দা ? এ রকম ব্যাজার মুখে এই সময় পার্কে বসে ? - এই সময় মানে ? পার্কে বসার জন্য পাঁজি দেখে আসতে হবে নাকি ? - না তা ঠিক নয় মানে এই সন্ধ্যেবেলা তোমাকে বড় একটা দেখা যায় না তো তাই আর কি। - ইচ্ছে হল তাই। - কেসটা কি বল দেখি । বৌদির সাথে ক্যাঁচাল করেছ নাকি ? - কেন ? - মেজাজটা দেখছি কেমন যেন খিঁচড়ে আছে। - না ভাই কিছু হয় নি আর যদি হয়েও থাকে তাহলে তোমার তাতে কি হে । যাও যাও নিজের কাজ করো গে। - অ কেস জন্ডিস মনে হচ্ছে। - ধুস শালা শান্তিতে বসারও উপায় নেই। অগত্যা আমি মহিম সামন্ত বাড়ির পথে রওনা দিলাম। একটু শান্তিতে বসে চিন্তা ভাবনা কর...

আজও বহ্নিমান

অগ্নিপরীক্ষা হয় আজও, হয় মৃত্যুর আলিঙ্গনে, সীতার পাতাল প্রবেশ। অহল্যা আজও অবাক,  নির্বাক, সতীত্বের ক্রূর সঙ্গা আজও বহ্নিমান। দ্রৌপদী আজও উলঙ্গ হয়, বস্ত্রহরণ!  সে তো রূপক মাত্র। দুঃশাসন! রূপকের সাজে যুধিষ্ঠিরের বিবেক। শব্দ শায়কে নগ্ন নারী অথবা মত্ত পুঙ্গব স্পর্শে। সখা আজ নিরুদ্দেশে, শুধু ঘুনপোকাদের বাস। অপরূপার চোখে কাপড়, জং ধরেছে নিক্তিতে।

পদ্য কথন

ছন্দ দিয়ে ছন্দ মেলাও আমের সাথে জাম, পদ্য লেখা নয়কো কঠিন কি আর এমন কাম। বললে হেসে হারাণ খুড়ো ভাবছ কি হে বৎস ! পদ্য লেখা আমার কাছে  দু-আঙুলে নস্য । পদ্য আমার বংশগত পদ্য আমার রক্তে, ছন্দ নাচে মাছের ঝোলে ছন্দ নাচে সুক্তে। হাবুল বলে হয়নাকি তা শুধু ছন্দ দিয়ে পদ্য ! যদি না থাকে তার মধ্যে একটু খানিক গদ্য। রঙের সাথে রঙ মিলিয়ে হয় কি আর আঁকা, খুড়ো বলে অল্প বয়সে খুব হয়েছ পাকা। পদ্য কাকে বলে সেটা শিখব তোর কাছে ! পদ্যের যত ছন্দ, আমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে আছে। শেষের সাথে শেষকে মেলাও, যা খুশি তাই কলম চালাও, ভাব বা মানে কোন কিছুর নেই কোন দরকার, মানুষ যত অবুঝ হবে বাড়বে কদর তার। এই যুগেতে খুঁজলে মানে বলবে সবাই বোকা, ভরবে না পে...

কোজাগরী

(ঋতুযান পত্রিকায় প্রকাশিত) আজ আঁধারে আলোর বন্যা, নিশি কষ্টের দরজায় আগল, ধুপের সুগন্ধে বাতাস ভারী, পুতগন্ধীময় রোজনামচার ছুটি আজ। দুখের দরজায় ফুলের সাজ, পিটুলি গোলা জলের আলপনার সারি, বুভুক্ষু চোখে হাজার বাতির আলো, চিড়ে-মুড়কি, মন্ডা-মিঠায়ের স্তুপ, দুস্থ পিপীলিকার অবাক চাউনি। মহাসিন্ধুর আশায় আজ বিন্দু বিন্দু সঞ্চয়ের সম্প্রদান, আগামীকাল শুরু খুদকুঁড়োর সন্ধান। সুখ-সকালের আশায় থাকা, কে জাগরী ! কে জেগে রয় ! ঘুমপরীদের ঘুম পাড়িয়ে নিশি জাগরণ আজ, রূপকথার জন্ম প্রতিক্ষায়।

তুমি না থাকলে

মা দূর্গার আরাধনায় উৎসবে মেতেছে গোটা বঙ্গ তথা সারা দেশ। এই আরাধনার মূল উদ্যক্তা ছিলেন স্বয়ং শ্রী রামচন্দ্র। সে কাহিনী আমরা রামায়ণে পড়েছি। কিন্তু একজন না থাকলে কোন মতেই আমরা এই মহিষমর্দিনী রূপের আরাধনায় মেতে উঠতে পারতাম না। ভাবছেন তিনি আবার কে ! গল্প উপন্যাসে যেমন নায়কের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে খলনায়কের অবতারনা করা হয় তেমনি অশুভ শক্তির উদয় না হলে শুভ শক্তির আবির্ভাব হয় না। ©Sudipta যদি মহিষাসুর না থাকত তাহলে মহিষমর্দিনী রূপ আমরা দেখতে পেতাম না আর আমাদেরও উৎসবে মেতে ওঠা হত না। শুধু কি মহিষাসুরের মধ্যেই অশুভ শক্তির বসবাস ! পূরাণ কিন্তু অন্য কথা বলে। অশুভ শক্তির বিনাশে অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে মহিষাসুর একজন কলাকুশলী মাত্র। আর...

বন্ধু আয়

মাঞ্জা সুতো, কাঠের লাটাই, আকাশ জুড়ে রঙের মেলা, ঘুড়ির সাথে সময় কাটাই। দীঘির থেকে একটু দূরে, ঐ যে নদী, নৌকা চুরি, একটু ঘুড়ি মাঝ নদীতে নদীর চরে। হাতে হাত ছিপ, ইলশেগুঁড়ি ভিজে চুপচুপ খেলার সাথি, কে যাবি আয় আমার সাথে বুকের মাঝে চড়ুইভাতি।

খিদে

ঝুপ করে সন্ধ্যা নামে, বুভুক্ষুরা জেগে ওঠে জ্যোৎস্নায়। মনের খিদে শব্দ খোঁজে, পেটের খিদে খোঁজে ভাত, শরীর খোঁজে শ্বাপদ, ঘনায় রাত। স্বপ্ন মোহিনী সুরা পাত্র হাতে, শব্দেরা আসে, দেয় ধরা। বিষ মেখে শুয়ে থাকে মোহিনী। খালি পেটে কি সুরা সয় ! খালি পেটে যৌনতা জাগে না, খালি পেটে কাব্যেরাও আসে না, পূর্ণিমার চাঁদে পোড়া রুটি ঝাপসা, চাঁদের আলো বিভিষিকাময়, শুরু, পেটে মোচড় দেওয়া আর এক রাতের সংগ্রাম।

প্রেম আমার

# প্রেম আমার # সুদীপ্ত চক্র ফর্সা রঙ, পরিপুষ্ট গড়ন, দেখলেই মনটা কেমন আনচান করে ওঠে। সাইজ এই ধরুন আঙ্গুল বিহীন হাতের তালুর মতো। হালকা হাতে তাকে স্পর্শ করলে মনে এক স্বর্গীয় অনুভুতি লাভ হয়।  পূর্বরাগে যত চটাকাতে পারবেন, তার উত্তরকালীন শ্রী তত বৃদ্ধি পাবে। সাথে যদি কচি বেগুন ভাজা হয় তাহলে তো পুরো জমে ক্ষীর। ওহঃ ভাবতেই আমার জিভে জল চলে আসছে। মিহি সাদা ধবধবে ময়দায় একটু  বেশি করে ঘি নিদেন পক্ষে ডালডার ময়ান দিয়ে ধিরে ধিরে চটকাতে থাকুন মানে ওই থাসতে থাকা আর কি। এরপর ছোট ছোট লেচি করে নিটোল গোল আকারে বেলে ডুবো তেলে ভেজে তুলুন ফুলকো লুচি। তবে লুচি মাত্রেই যে বেগুন ভাজা সহযোগে সাবার করতে হবে...

২৫শে আলাপ

যদি তারে নাই চিনি গো সে কি ...... সৈকত গুনগুন করতে করতে একটা কাগজে কিছু লিখছিল। হঠাৎ  অঙ্কিতা কাগজটা হাতে নিয়ে দলা পাকিয়ে ঘরের এক কোনে ছুঁড়ে ফেলে দিল। সৈকত বুঝল প্রবল ঝড়ের আগমন বার্তা। ঝড়ের প্রকোপ কমানোর জন্য সৈকত বলল - -  ছলছল চোখ , রক্তরাঙা মুখ, প্রিয়ে  কি বা হেতু তোমার এ রূপ। - ন্যাকামি হচ্ছে ! - না মানে - আজ তোমার জন্য সবার কাছে আমার মাথা হেঁট হয়েগেছে। - আমার জন্য ! আমি আবার কি করলাম !  আমি তো তোমাদের রবীন্দ্র জয়ন্তী উৎসবে যাই নি।  তাহলে ? - সেই জন্যেইতো দিপালী সবার সামনে ও ভাবে অপমান করল। - কি রকম কি রকম ! - তোমার মজা লাগছে ! তা তো লাগবেই।  আ...

বর্ষবরণ

কিছুদিন যাবৎ শরীরটা একটু গোলমাল করছে। রক্তচাপ চিনিচাপ দুটোই উর্দ্ধমুখী। ফল স্বরূপ খাওয়াদাওয়ার প্রতি বাড়ির সবার কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে অবস্থান করছি। বছরের শেষদিন একটু মিষ্টিমুখ করার প্রবল ইচ্ছা মনে জেগে উঠল। কথায় বলে যার শেষ ভাল তার সব ভালো। সেই শেষটুকু ভালো করার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পরলাম। ছোট থেকেই রসগোল্লার প্রতি আমার বিশেষ অনুরাগ। কিন্তু পরিচিত দোকানগুলিতে গেলেই বিপদ। কখন কার সাথে দেখা হয়ে যাবে আর সংবাদ পৌঁছে যাবে সোজা বাড়ির অন্দর মহলে। তারপর কি হবে তা আর খোলসা করে না বলাই ভালো। তাই খুঁজেপেতে একটা অনামি দোকানে হাজির হলাম। কাঠের বেঞ্চে বসে দুটো বড় সাইজের রসগোল্লা নিয়ে সবে এ...

চেনা পুরী অচেনা ভ্রমণ

ছবি
সমুদ্রের প্রতি আমার একটা অমোঘ আকর্ষন আছে সেটা অস্বীকার করতে পারি না। আর বাঙালীর কাছে সস্তার সমুদ্র ভ্রমনের জায়গা হল পুরী। অনেকে এই পর্যন্ত পড়েই রে রে করে উঠবেন যে বাঙালী পুরী যায় তীর্থ করতে। সমুদ্র ভ্রমন কেন হবে। সেটা হয়তো অনেকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু আমার মতো কতিপয় মানুষ আছেন যাদের কাছে পুরী মানেই সমুদ্র। আমার কাছে সন্ধ্যেবেলা বৌ-মেয়েকে পাশে নিয়ে সমুদ্রের ধারে বসে থাকার আনন্দটাই আলাদা রকম। এর আগেও বহুবার পুরী গিয়েছি তাই এবারে পুরী যাওয়ার কথা উঠতেই বৌ বলল একই জায়গায় কতবার যাবে!  মেয়ে বলল যেতে পারি তবে সমুদ্র ছাড়া আর কোথাও যাব না। কিন্তু সারাদিন সমুদ্রের ধারে কি করব সেটাও একটা সমস্যা। পুরীর আশেপাশে যে দর্শনীয় স্থান গুলি আছে তা আগে বেশ কয়েক বার দেখা হয়েগেছে। তাই এবার ভাবলাম যে পুরীর আশেপাশে এমন কোন জায়গায় যাব যেখানে আগে কখনো যাই নি। তাই মেয়েকে বললাম চল এবার নতুন ভাবে পুরী দেখব। দূর্গাপুর থেকে হাওড়া স্টেশন হয়ে র ওনা দিলাম পুরীর পথে।পরদিন সকালবেলা পুরী স্টেশন পৌঁছে অটো ধরে চললাম স্বর্গদ্বারের দিকে। অটো যখন নিউ মেরিন ড্রাইভ রোডে উঠল তখন সমুদ্রের গর্জন আর ...